chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন

গত এক সপ্তাহে বিশ্বাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হয়েছে। এক সপ্তাহেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১০ শতাংশের ওপরে কমে গেছে।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পাশাপাশি ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দামেও বড় পতন হয়েছে। এতে এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে চলে এসেছে জ্বালানি তেল।

গত সপ্তাহের শুরুতে বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৭৯ দশমিক ৯৭ ডলার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবার এক পর্যায়ে তা বেড়ে ৮২ দশমিক ৩৩ ডলারে উঠে যায়। এরপর থেকেই কমতে শুরু করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।

ধারাবাহিকভাবে দাম কমতে কমতে সপ্তাহ শেষে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক শূন্য ২ ডলার। গত বছরের ডিসেম্বরের পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের এত কম দাম আর দেখা যায়নি।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের এ দরপতন শুরু হয় চলতি বছরের জুন থেকে। জুনের ৮ তারিখের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। গত ৮ জুন প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ১১৭ টাকা ১৫ পয়সা।

সে হিসাবে ছয় মাসের ব্যবধানে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ৪৬ দশমিক ১৩ ডলার বা ৩৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১১ দশমিক ২০ শতাংশ। আর এক মাসের ব্যবধানে কমেছে ১৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পাশাপাশি বড় দরপতন হয়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম কমেছে ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর মাসের ব্যবধানে কমেছে ১৬ দশমিক ৭১ শতাংশ।

এতে বর্তমানে প্রতি ব্যারেরল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৭০ ডলার। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বরের পর ব্রন্ট ক্রুড অয়েলের এত কম দাম আর দেখা যায়নি।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মতো ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলও চলতি বছরের ৮ জুনের পর থেকে দরপতনের মধ্যে রয়েছে। ৮ জুন প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ১২০ দশমিক ৮৯ ডলারে ছিল।

এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমেছে এ জ্বালানি তেলের দাম। এতে ছয় মাসের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম কমেছে ৪৪ দশমিক ১৯ ডলার।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২ সালের শুরু থেকেই জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ে ১৬ শতাংশের বেশি। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল দাম বাড়ে প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ।

জানুয়ারির মতো ফেব্রুয়ারিতেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এর মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে জ্বালানি তেলের দাম এক’শ ডলার ছাড়িয়ে যাবে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।

নিউইয়র্কভিত্তিক ফরেন এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ওনাডার বিশ্লেষক অ্যাডওয়ার্ড মোয়া ফেব্রয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বলেন, ইউক্রেনে আক্রমণ হলে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১০০ ডলার ছাড়াতে কোনো বাধা থাকবে না।

তার এ অভিমত সত্য প্রমাণিত হয় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করার পর পরই। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করতেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম একশ ডলারে উঠে যায়।

দফায় দফায় দাম বেড়ে ৮ মার্চ প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম রেকর্ড ১২৩ দশমিক ৪৮ ডলারে উঠে যায়। আর প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম উঠে ১১৯ দশমিক ৬৫ ডলারে।

এর আগে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিলে ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল বিশ্ববাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরপতনের মধ্যে পড়ে জ্বালানি তেল। সে দিন প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ঋনাত্মক ৩৭ ডলারের নিচে নেমে যায়।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর