chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ই-সেবায় বদলে গেল কর্ণফুলী ভূমি অফিসের দৃশ্যপট

কর্ণফুলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী’র জনবান্ধব প্রচেষ্টায় ভূমি অফিস এখন নতুন রূপে বদলে গেছে। নেই এখন দালালের উৎপাত, নেই হয়রানি, নেই উৎকোচের দৌরাত্ম। গত দেড় বছরে কমেছে জনদূর্ভোগ। যে কেউ সরাসরি কমিশনারের রুমে প্রবেশ করলেই পাচ্ছেন ১৬ আনা সমাধান।

আগে জমির নামজারি, মিচ মামলা, তদন্ত, দাগ নম্বর সংশোধন, করণিক ভূলসহ জমি সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে মাসের পর মাস ঘুরতে হতো। এখন নেই হয়রানি। বর্তমান এসিল্যাণ্ডের ই সেবায় স্বস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ ভূমি গ্রাহকদের মাঝে।

নামজারিতে সাত দিনে প্রসেস মতে অটো মেসেজ পাচ্ছে গ্রাহক। ফাইল মুভ না করলে জবাবদিহিতায় পড়ছে স্ব স্ব ভূমি অফিসের তহসিলদারগণ। এমনকি আগে ১৪৫ ধারার মিছ মামলার প্রতিবেদনে তহসিলদারগণকে ম্যানেজ করে বাদী বিবাদী প্রতিবেদন অগ্রবর্তী করতেন। এখন সে পথও রুদ্ধ। কারণ এসিল্যাণ্ড নিজেই ১৪৫ ধারা মামলার বাদি বিবাদীকে স্বশরীরে তলব করে শুনানি করেন। ফলে, প্রতিবেদনে অন্দরমহলে কিছু তোলে দেবারও সুযোগ নেই। এতে ভূমি সেবা নিতে যারা আসেন তাঁরা সকলেই সন্তুষ্ট বলে জানা যায়।

এক সময় ভূমি অফিসের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষ ভূমি অফিসে আসতে ভয় পেত। আর দালালদের উৎপাত ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এখন সবই অতীত। সব সিণ্ডিকেট ভেঙে সাধারণ মানুষের সেবায় কর্ণফুলী উপজেলা ভূমি অফিস এখন উন্মুক্ত দ্বার।

সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে ভূমি অফিসে খোলা হয়েছে সেবা সহায়তা কেন্দ্র, সুবিন্যস্ত রেকর্ড রুম, তথ্য বাতায়ন, সিটিজেন চার্টার, বসার ওয়েটিং রুম, ডিজিটাল সাইনবোর্ড, শুনানির মাধ্যমে জবাবদিহিতাসহ তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়া এক আলোকোজ্জ্বল ভূমি সেবা।

এছাড়াও রেকর্ড রুম সুন্দর ভাবে বছরওয়ারী সাজানো হয়েছে। আগে অতীতের কোন তথ্য উপাত্ত বা মামলার নথিপত্র দেখতে অনেক সময় লেগে যেত। নথি পেতে টাকা লাগতো। এখন আবেদন করলেই ফ্রিতে সমস্ত নথিপত্রের কাগজ পেয়ে যাচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

অফিসে সেবা পেতে আসা শিকলবাহার আলমগীর কবির, মোহাম্মদ বাহাদুর খাঁন ও চরপাথরঘাটার সরোয়ার খাঁন জানান, ‘বর্তমান এসিল্যাণ্ড স্যার যোগদানের পর থেকে ধীরে ধীরে বদলে দিয়েছেন অফিসের অবস্থানসহ বিভিন্ন সেবাসমূহ। আগে করণিক ভূল ঠিক করতে হাশর কেয়ামত নামতো এখন ওয়ান স্টপে সার্ভিস পাচ্ছি। যা কল্পনার বাহিরে। আগে প্রতিটি ইউনিয়নে দখল বেদখল, মারামারি ও পরিষদে জায়গা জমি নিয়ে নানা বিচার সালিশ ছিলো এখন তাও কমে গেছে। কেননা, সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী কর্ণফুলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী।’

ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা উজ্জ্বল কান্তি দাশ জানান, বিভিন্ন সময়ে বর্তমান এসিল্যাণ্ড স্যার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সরকারি খাস ১৭ একরেরও বেশি  জমি উদ্ধার। যা বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকার উপরে। এছাড়াও নদী থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলন বন্ধ, অবৈধ অনুমোদনহীন খাদ্য কারখানা বন্ধ, প্রটেকশনহীন এলপিজি গ্যাস কেনা-বেচা, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়ানস্টিক, অপরিছন্ন হোটেল এবং সরকারি খাল দখলসহ নানা বিষয়ে অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক স্যারের দিক নির্দেশনা, এডিসি রাজস্ব স্যারের সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের অফিসে আসা সকলের জন্য জনবান্ধব জনসেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

তিনি আরও বলেন, ‘যার কাজ তাকেই সরাসরি আমার অফিসে আসতে উৎসাহ দিচ্ছি। অন্য কারো হাত দিয়ে আসা মানেই সেখানে অন্য ব্যক্তি ঢুকে পড়া। ফলে এখন সেবা গ্রহীতারা সরাসরি আমার অফিসে আসতে পারছেন।’

 

ফখ/তাসৃু/চখ