নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামি শরিয়াভিত্তিক ও সুদমুক্ত প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে গ্রাহকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ছলিম উল্লাহকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রবিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক কামরুন নাহার রুমি তার জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ আদালতের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, মাওলানা ছলিম উল্লাহ নামে এক ব্যক্তির জামিন আবেদন নাকচ করেছে আদালত। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদীর আইনজীবী শেখ আল জাবেদ বলেন, পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ছলিম উল্লাহ রোববার আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
জানা গেছে, ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভা সদরে এহসান সোসাইটি নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার ৬০০ জন গ্রাহকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাওলানা ছলিম উল্লাহসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন গ্রাহক আসাদুজ্জামান। ওই মামলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মাওলানা ছলিম উল্লাহ ২০০৭ সালে এহসান সোসাইটি চালু করেন। এহসান সোসাইটিকে ইসলামি শরিয়াভিত্তিক ও সুদমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবি করে প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুদ না খেয়ে তার প্রতিষ্ঠানে ডিপিএস খোলার জন্য স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করা হয়।
তিনি যেহেতু ফটিকছড়ি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস ও আলেম, তার কথায় বিশ্বাস করে স্থানীয়রা হিসাব খুলতে শুরু করেন। গ্রাহকদের বলা হয়, তাদের জমানো টাকা ছয় বছরে দ্বিগুণ বা ইসলামি শরিয়া মোতাবেক কমবেশি হবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ডিপিএসের মেয়াদপূর্তি দুই বছর বাড়িয়ে আট বছর করা হয় এবং শর্ত দেয়া হয়, মেয়াদপূর্তির আগে কোনো লভ্যাংশ গ্রাহককে দেয়া হবে না। এভাবে অন্তত আট বছর অর্থ লেনদেন করার পর গ্রাহকদের ডিপিএসের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার শেষ মুহূর্তে প্রতিষ্ঠানের কর্তারা গা ঢাকা দেন।
মাওলানা মুহাম্মদ ছলিম উল্লাহ হেফাজতের প্রয়াত আমির আল্লামা শফীপন্থি হিসেবে পরিচিত। শফীর কমিটিতে তিনি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তবে গত বছর হেফাজতের আরেক প্রয়াত আমির জুনায়েদ বাবুনগরীপন্থিরা মাওলানা ছলিম উল্লাহকে নাজিরহাট মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন।
এসএএস/জেএইচ/চখ