chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য হার

খেলা ডেস্ক: এ যেন অসম্ভবকে সম্ভব করা। চতুর্থ দিন শেষেও কেউ ভাবতে পারেনি বাংলাদেশ ম্যাচটি হারতে পারে। কিন্তু তাই হলো। কাইল মায়ারসের ডাবল শতকে প্রথম টেস্টে ৩ উইকেটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ।

শেষ দিনে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে ধৈর্য্যশীল ব্যাটিংয়ের পরীক্ষা দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোস্তাফিজদের একাধিক ভুলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একের পর বাউন্ডারিতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে সফরকারীরা।

আজকের দুই সেশনে ৫৭ ওভার ব্যাটিং করে ১৫৬ রান যোগ করেন মায়ারস ও বোনার। সবমিলিয়ে তাদের জুটি ভাঙে ২৩০ রানে। যা ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে চতুর্থ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি।

সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে ফিরেছেন বোনার। মাঠ ছাড়ার আগে তিনি করেন ৮৬ রান। তবে অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেয়া মায়ারস খেলেছেন ২১০ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস। এ দুজনের জুটিতেই মূলত জয়ের স্বপ্ন দেখতে পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যদিয়ে টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েন ক্যারিবিয়রা। আর তা হলো বাংলাদেশের বিপক্ষে।

তৃতীয় সেশনের শুরুতে কিছুটা চাপে ফেলেছিল তাইজুল-মেহেদীরা। কিন্তু জোসুয়া ডি সিলভাকে সাথে নিয়ে ধীর পরিকল্পনা মাফিক ব্যাট চালিয়ে যান মায়ারস। ৭টি ছক্কা ও ২০টি বাউন্ডারিতে ২১০ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন বাহাতি এই ব্যাটসম্যান।

দিনের প্রথম সেশনে একাধিক সুযোগ তৈরি করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। কিন্তু কখনও রিভিউ না নেয়ার ভুল, আবার কখনও ক্যাচ ছেড়ে ক্যারিবীয়দের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। যার সুবাদে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় সফরকারীরা।

চতুর্থদিন করা ৩ উইকেটে ১১০ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ দুই প্রান্ত থেকে মেহেদি মিরাজ ও তাইজুলকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। প্রথম সেশনে মেলেনি সাফল্য, সুযোগ পেয়ে মায়ারস ও বোনার অবিচ্ছিন্ন জুটিতে যোগ করেছেন ১৩৮ রান।

মেহেদি মিরাজের বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে হাফ সেঞ্চুরিয়ান মায়ারসের ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সে বলে পাওয়া সিঙ্গেল থেকে ফিফটি পূরণ হয় মায়ারসের। এ ছাড়া ইনিংসের ৫০তম ওভারে তাইজুলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদেও পড়েছিলেন মায়ারস। আম্পায়ার আউট দেননি, রিভিউও নেয়নি বাংলাদেশ। কিন্তু সেই বলটি আঘাত হানত লেগস্ট্যাম্পে। ফলে সুযোগ পান মায়ারস।

সেশন শেষ হওয়ার ওভারে রিভিউ না নেয়ার ভুল করেনি বাংলাদেশ। এবারও বোলার ছিলেন তাইজুল, ব্যাটসম্যান মায়ারস এবং আম্পায়ারের সিদ্ধান্তও ছিল নটআউট। টাইগাররা রিভিউ নিলে দেখা যায়, সেই বলের উইকেটস ছিল আম্পায়ারস কল।

শুধু মায়ারস একা নন। বাংলাদেশের রিভিউ ভুলে বেঁচেছেন বোনারও। ইনিংসের ৫৬তম ওভারে নাঈম হাসানের দুর্দান্ত টার্নিং ডেলিভারি গিয়ে আঘাত হানে বোনারের পায়ে। বল লেগস্ট্যাম্প দিয়ে বের হয়ে যাবে ভেবে আউট দেননি আম্পায়ার, বাংলাদেশও নেয়নি রিভিউ। রিপ্লেতে দেখা যায়, সে বলটিও লেগস্ট্যাম্পে লাগত। ফলে মায়ারসের মতো বেঁচে যান বোনারও।

ইনিংসের ৮২তম ওভারে তাইজুলের বলে বোনারকে লেগ বিফোরে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বোনার।

চট্টগ্রাম টেস্ট জয়ে শেষ সেশনে টাইগারদের প্রয়োজন ছিল ৫ উইকেট। কিন্তু আক্রমণাত্মক হতে পারেননি মোস্তাফিজ, তাইজুল ও মিরাজরা। শেষ দিকে জয়ের জন্য যখন ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন ২ রান তখন পরপর দুটি উইকেট তুলে নেন মিরাজ ও তাইজুল। তবে তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে ৩ উইকেটের হারের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিক বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪ উইকেটে নেন মিরাজ। এ ছাড়া তাইজুল ২টি ও নাঈম হাসান নেন একটি উইকেট।

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর