চট্টগ্রামে প্রচণ্ড গরমে বেড়েছে জ্বর-ডায়রিয়া
চট্টগ্রামে প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়া, জ্বর, কাশি, হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে মানুষ। বেশি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলাগুলোতে মৃদু তাপপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। তাই বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী বেড়ে চাপ গেছে।
তাছাড়া এই প্রচণ্ড গরমে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট নগরবাসীর যন্ত্রণা বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নবজাতক, শিশু ও বৃদ্ধরা।
চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহ ধরে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল সোমবাড় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২০৫ শিশুর মধ্যে ৯০ জনই ছিল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। অন্যদের মধ্যে বেশির ভাগই জ্বর, সর্দিকাশিসহ শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। অন্তর্বিভাগের পাশাপাশি বহির্বিভাগে এ ধরনের রোগী আসছে।
মা-শিশু জেনারেল হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আবু সৈয়দ চৌধুরী বলেন, প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে শিশুরা আসছে। এ ছাড়া ডায়রিয়া রোগী থাকে গড়ে ৯০ জনের মতো। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২০০ রোগী দেখা হয়। সেখানেও প্রায় অর্ধেক ডায়রিয়া আর বাকিরা গরমজনিত শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত চেম্বারে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডেও জ্বর, কাশি এবং ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। তবে, বেশিরভাগ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার হচ্ছে না, কারণ তাদের লক্ষণগুলো হালকা।’
প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, ‘গরমের কারণে শিশুদের শ্বাসকষ্ট কিংবা নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ভাইরাস জ্বরও হচ্ছে। এ ছাড়া ডায়রিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ ধরনের রোগী আমরা বেশি পাচ্ছি চেম্বারে। হাসপাতালে শ্বাসকষ্টের রোগী স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আসছে।’
চিকিৎসকেরা বলেন, গরমে বাইরের পচা-বাসি খাবার ও দূষিত পানির কারণে শিশুরা ডায়রিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছে। একই কারণে শ্বাসকষ্টজনিত নিউমোনিয়া রোগী বেড়েছে। এ ছাড়া গরমের কারণে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে শিশুদের। এসব ক্ষেত্রে দেরি না করে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
গতকাল চমেক হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগে রহিমা আক্তার নামের এক নারী বলেন, তাঁর এক বছরের ছেলের চার দিন ধরে জ্বর ও ডায়রিয়া। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ানোর পরও কমছিল না। পরে তিনি সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
হাসপাতালের পাশাপাশি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারেও এ ধরনের রোগী বেড়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। চিকিৎসকেরা শিশুদের পচা-বাসি খাবার ও দূষিত পানি পান করানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আর শিশুরা ঘামলে তা মুছে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
চখ/জুঈম