chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

অসহ্য গরম আর লোডশেডিংয়ে কাহিল জনজীবন

গেল কয়েক দিন ধরে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। কোথাও এতটুকু স্বস্তির পরশ নেই। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আপাতত তাপমাত্রা কমে আসার লক্ষণ নেই। বরং সামনের দিনগুলোতে গরমের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের যাওয়া আসা। প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন স্থানে ৫ থেকে ৬ বার লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটছে। যার কারণে বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের কষ্ট ও ভোগান্তির মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছিয়েছে।

এখানেই শেষ নয়, কাপ্তাইয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে পানির স্তর কমে আসায় বেড়ে গেছে অতিরিক্ত লবণের পরিমাণ। যার কারণে দৈনিক ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সুপেয় পানি উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওয়াসা। ফলে নগরের অনেক এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি পাওয়া যাচ্ছে না। গোসলসহ গৃহস্থালি কাজ সারতে গিয়ে বেকাদায় পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। অনেকেই গোসল না করেই সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। কোথাও আবার সামান্য পানি মিললেও তা চাহিদা তুলনায় কম। অসহ্য গরম, তীব্র লোডশেডিং আর পানির হাহাকারে নাকাল নগরবাসী। এক্ষেত্রে সেবা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কোনোও কোনো সুখবর নেই।

জানতে চাইলে পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। পিক আওয়ার কিংবা অফ পিক আওয়ারে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া একেক সময় বিদ্যুতের চাহিদা ওঠা নামা করে। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় লোডশেডিং বেড়ে গেছে। এরপরও আমরা বিভিন্নভাবে বিপর্যয় কমাতে কাজ করে যাচ্ছি।

অন্যান্য সময়ে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার। তবে হালদায় লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ১৫ লিটার উৎপাদন কমে এসেছে সংস্থাটির। এমন পরিস্থিতি রেশনিং করে সংকট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এতে ভোগান্তির মাত্রা কমেনি। এক্ষেত্রে নগরবাসীকে পানি ব্যবহারে আরও যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, হালদায় লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বেশষ কয়েক দিন ধরে আমাদের উৎপাদন কমে গেছে। বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে আমরা পানি না পাওয়ার অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা রেশনিং করে পাইপলাইনে পানি দেওয়ার চেষ্টা করছি। বৃষ্টি না হলে এমন পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

এদিকে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুরসহ দেশের আটটি জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রের্কড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড করা হয়েছে। আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রামে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া কর্মকর্তা।

আরকে/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর