chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প থেকে ১০০ কোটি টাকা চান মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক: লোকবল সংকট ও অর্থের অভাবে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় শেষ হওয়া খালের তদারকির দায়িত্ব এখনই নিতে অপরারগতা জানালেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এসব খাল রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় মেটাতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা চেয়েছে চসিক। একই সঙ্গে চলতি বছরে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ন্যস্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে জলাবদ্ধতা নিয়ে চসিক ও চউক এর যৌথ সমন্বয় সভায় চসিকে মেয়র এ দাবি জানান। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় চসিক মেয়র বলেন, খাল ও নালা পরিষ্কারের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তবে এসব খালগুলো পরিস্কার করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। চসিকের কাছে রাস্তাঘাট পরিষ্কারের জন্য প্রকল্প আছে৷ কিন্তু খাল-নালা পরিষ্কারের জন্য কোনো অর্থের বরাদ্দ নেই। কেননা আমাদের সে রকম জনবল ও অর্থ নেই। এখন আমাদের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিল আমাদের পক্ষে তদারকি করা কঠিন হয়ে পড়বে। প্রকল্প প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হলে আমাদের পক্ষ থেকে দেখভাল করা সম্ভব হবে। প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে অর্থ পেয়ে মেন্টেন্যান্সের দায়িত্ব নিতে পরবো। জলাবদ্ধতার প্রকল্পের কাজ শেষে খাল ও নালা তদারকির জন্য প্রতিবছর মন্ত্রণালয় থেকে ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দাবি জানাচ্ছি।

মেয়র আরও বলেন, গত বছরের জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীকে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। খাল ও নালায় পড়ে অনেকে মারা গিয়েছেন। এর সঙ্গে বেশ কিছু অনাকাঙিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই এবারের বর্ষায় মানুষ যেনো স্বস্তি পায়। বর্ষার মৌসুমে পানি উঠবে, তবে তাড়াতাড়ি পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছেন। সে অনুযায়ী চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চার বছরের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। খাল ও নালা তদারকির মালিক চসিক । আমরা জলাবদ্ধতা কাজ শেষ করে দিবে, এটি তাদেরকে দেখভাল করতে হবে। আশা করি এবারের বর্ষায় মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে।

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। এ প্রকল্পের অধীন ৫টি খালের ওপর রেগুলেটর বসানো হয়ছে। যা চলতি বছরের জুনে চালু করার কথা রয়েছে। এ নিয়ে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড থেকে প্রয়োজনীয় লোকবলের চাহিদা দিলেও, এখনও কোনো সংস্থাই এর ব্যবস্থা করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতি জলাবদ্ধতার আর একটি  প্রকল্প নিয়ে কাজ করা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এসব খাল তদারকির দাবি জানান চসিক মেয়র।  তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ প্রস্তাবে রাজি না হলে চসিকের ভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে বলেও সভায় জানানো হয়েছ।

এসময় প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহ আলী বলেন, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ২২ টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব পয়েন্ট দিয়ে চট্টগ্রাম শহরের পানি নদীতে গিয়ে পড়বে। আমাদের প্রকল্পের আওতায় ৭ টি খালের কাজ শেষ। আগামী জুনে আরও ১১ টি খালের কাজ হবে। এছাড়া বেশ কিছু খালের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কারণে আমাদের কাজ করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে।

চসিক ও চউকের যৌথ সমন্বয় সভায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা জলাবদ্ধতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এসময় চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম,চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

আরকে/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর