chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ঈদের দিন দুই দফায় পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালাবে চসিক

ঈদের দিন চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন রাখতে দুই দফায় নগরীতে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

আজ মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। প্রথম দফায় ঈদের দিন ভোর ৪টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সেবকরা নগরীর রাজপথ থেকে অলি-গলি পরিস্কার করবেন৷ ঈদ জামাত ও ঈদ উদযাপন উপলক্ষে বিরতির পর বিকাল ৫টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত আবর্জনার গাড়ি দিয়ে সংগৃহীত আবর্জনা ময়লার ভাগাড়ে নেয়া হবে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং মশার প্রকোপ কমাতে পরিচ্ছন্ন বিভাগকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। গত কোরবানির ঈদে মাত্র ৭ ঘন্টায় নগরীকে পরিচ্ছন্ন করে সারা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিল চসিক। এবার রোজার ঈদেও এভাবে চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এবার ঈদে যেহেতু বন্ধ বেশি সেহেতু নগরীকে পরিস্কার রাখার চ্যালেঞ্জও বেশি। ঈদের বন্ধে যাতে নগরী পরিচ্ছন্ন থাকে সে বিষষটি নিশ্চিত করতে হবে।

কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, কাউন্সিলররা ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম ঠিকমতো হচ্ছে কী না তা তদারক করবেন। কেউ ফাঁকি দিলে লিখিত অভিযোগ দিবেন। তদন্ত করে শাস্তি দেয়া হবে। এ ব্যাপারে কোন তদবির-সুপারিশে কাজ হবেনা।

পরিচ্ছন্ন বিভাগের জোন প্রধান ও সুপারভাইজারদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, কয়েকদিন আগে মহেষখালে গিয়ে দেখলাম কচুরিপানায় ভর্তি হয়েগেছে। জোন প্রধানদের কাজ কী? যেখানে যাই সেখানে দেখি ময়লার স্তুপ। সুপারভাইজারদের কাজ কি? নগরীতে সুইপিং কার্যক্রমও কমে গেছে৷ অধিকাংশ জোন প্রধান ও সুপারভাইজারের দায়িত্বপালনে অবহেলা আছে। চসিকে বেতন নিবেন, আর অন্য জায়গায় চাকরি করবেন তা হবেনা৷ আপনারা রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী রাখলে জব্দ করেন। কেউ পোস্টার লাগালে, নোটিশ দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিন। কোচিং সেন্টারগুলা পুরা শহরটাকে নষ্ট করে ফেলছে। যত্রতত্র পোস্টারিং বন্ধ করতে হবে। ময়লার গাড়িতে তেরপাল ব্যবহার নিশ্চিত করেন৷ লোকবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করা হবে।”

প্রতি মাসে একবার পরিচ্ছন্ন বিভাগকে নিয়ে সভা করার এবং পরিচ্ছন্ন বিভাগের জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেন মেয়র।

সভাপতির বক্তব্যে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে আমরা চসিকের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে যাচ্ছি। এপ্রিলের শেষে চসিকের সাথে ইউএনডিপির সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে৷ আমরা চসিকের প্রতিটি স্কুল থেকে ২ জন করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিব। এরপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা স্কুলের বাকী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিবে।

প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী বলেন, শহরে রাস্তায় ময়লা দেখতে চাইনা। যত্রতত্র ময়লার কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, জনগণ কষ্ট পাচ্ছে। কোথাও ময়লা পেলে সুপারভাইজারকে সাসপেন্ড করা হবে৷ প্রয়োজনে সুপারভাইজার ছাড়া, জোন কর্মকর্তাদের দিয়ে ওয়ার্ড চালাব।

“জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। এরপরও কেউ ময়লা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে অভিযান চালানো হবে। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রমের গতি বাড়াতে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে ব্যবহৃত গাড়ির নিয়ন্ত্রণ যান্ত্রিক উপ-বিভাগ থেকে পরিচ্ছন্ন বিভাগে নেয়া হচ্ছে। মশার পর্যাপ্ত ঔষধ মজুদ করা হয়েছে। আশা করি ঈদের পর পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রম আরো দৃশ্যমান হবে।”

প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, এবার ঈদের বন্ধ বেশি থাকায় পরিচ্ছন্ন বিভাগকে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে৷ জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি মনে করি কাউন্সিলরদের আরো বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম গড়া সম্ভব।

ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি বলেন, ডেঙ্গুর ঢেউ আসছে।এ ঢেউ ঠেকাতে কাউন্সিলরদের সহযোগিতা প্রয়োজন। কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে প্রতিটা ওয়ার্ডে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। বর্তমানে পর্যাপ্ত ঔষধ আছে এবং ভবিষ্যতে মজুদ আরো বাড়ানো হবে। এছাড়া আমরা মশা নিয়ে গবেষণায় ল্যাব করছি৷ ল্যাবের সুফল আসতে হয়তো একটু সময় লাগবে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে বিজ্ঞানভিত্তিক মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে।

উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে জোন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। নগরীতে অবৈধ হকারমুক্ত করতে প্রয়োজনে ঝুঁকি নিতে হবে। শুধু ঔষধ মেরে মশা কমানো সম্ভব না। ঔষধ প্রয়োগের আগে নালা পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

সভায় কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, আবদুস সালাম মাসুম, আবদুল মান্নান, রুমকি সেনগুপ্তসহ পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন।

 

 

তাসু | চখ

এই বিভাগের আরও খবর