chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে মেয়েদের বিক্রি করে দিচ্ছেন বাবা

বহু বছরের যুদ্ধ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুহারা আফগানিস্তানে হাজার হাজার মানুষ। এরা থাকে হেরাতের ঠিক বাইরে। অর্থনীতি ধসে পড়ার পর আরেকটি শীত আসছে। এখানে ঘরে ঘরে তীব্র ক্ষুধার গল্প।

স্থানীয়দের বক্তব্য উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে। সেখানের এক বাসিন্দা আবদুল রাহাব বলছেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদে, তখন আমরা ওদের ওষধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেই। ওরা মরে গেলেই ভালো।’

এমন মন্তব্য কেবল আবদুল রাহাবের নয়। সেখানকার আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা অনেকেই এই একই কাজ করে চলেছেন। গোলাম হযরত নামের একজন নিজের পকেট থেকে ঘুমের ওষুধ বের করে দেখান। ওষুধগুলোর নাম ট্রাংকুলাইজার। অনেকে এন্টি ডিপ্রেসেন্ট ওষুধও দিচ্ছে তাদের ছেলে-মেয়েদের। বাজারে এক টুকরা রুটির দামেই পাওয়া যায় পাঁচটি ট্যাবলেট।

গোলাম হযরত জানান, এক বছর বয়সী সন্তানকে তিনি এটা খাওয়াচ্ছেন। ক্ষুধা এদের সব সম্মান কেড়ে নিয়েছে।
আফগানিস্তানে নিজের মেয়েকে বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক বাবা।

দিনমজুর এক বাবা নিজামউদ্দীন তিনি বলেন, ‘আমি বারোশো ডলারে আমার পাঁচ বছরের মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছি। আমার কিশোর ছেলেকে ইরানে পাঠিয়ে দিয়েছি অবৈধভাবে কাজ করতে। আমার ছোট ছেলেরা প্রতিদিন আবর্জনা কুড়ায়।’

‘আমাদের কিছুই নেই, আমরা ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায় যাব? এই সব বাবারা এমন প্রশ্নই সামনে নিয়ে এসেছেন।

চার বছরের নাজিয়া থাকে পাশের বাড়িতে। তাকে বিক্রি করা হয়েছে। চার বছরের এই মেয়েটিকে বিক্রি করা হয়েছে কান্দাহারের এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দওয়ার জন্য। তার বাবা হযরতউল্লাহ মসজিদে গিয়ে বলেছিলেন, খাওয়াতে পারছেন না, তাই তিনি এ কাজ করছেন। নাজিয়ার ১৪ বছর হলে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

হযরতউল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার সব টাকা খরচ করেছি খাবার কিনতে, কিছু আমার ছেলের জন্য ওষুধ কিনতে পারছিনা। আমার ছেলে অপুষ্টিতে ভুগছে, চিকিৎসা দরকার। যদি অন্য পথ থাকতো আমি মেয়েকে বিক্রি করতাম না।’

আফগানিস্তানে এ রকম কাহিনী খুঁজতে বেশি কষ্ট করতে হয় না। এমন গল্প ঘরে ঘরে। এখানকার মানুষ মনে করে আফগান্তিস্তানের সরকার এবং বিশ্ব সম্প্রদায় সবাই তাদের পরিত্যাগ করেছে। পরিস্থিতি খুবই খারাপ, অর্ধেকের বেশি মানুষকে বাঁচাতে জরুরি সাহায্য দরকার।

চখ/জুইম

এই বিভাগের আরও খবর