chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মুহুর্তেই বদলে যায় মোবাইলের ‘আইএমইআই’

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল ফোন সেটের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) নম্বর দিয়ে থাকে। উদ্দেশ্য মোবাইল ছিনতাই, চুরি, কিংবা হারিয়ে গেলে অথবা ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে অপরাধ করলে যাতে দ্রুত শনাক্ত করা যায়।  কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে  আইএমইআই পরিবর্তন করে ফেলতো একটি চক্র।  ফলে সেই মোবাইলের কোন হদিস মিলতো না। চক্রের এমন তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার(৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের  উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিসি মো. জসিম উদ্দিন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. সাজ্জাদ (২০), হাবিবু্ল্লাহ মিজবাহ (২৫) ও মো. রাশেদ (২০)।

এসময় ১১৭টি মোবাইল সেট, আইএমইআই পরিবর্তনের সফটওয়ার ইন্সটল করা তিনটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।

ডিসি জসিম উদ্দীন বলেন, ৫টি চোরাই মেবাইলসহ সাজ্জাদকে গ্রেফতার করা হলে আাইএমইআই বদলে ফেলার ঘটনাটি সামনে উঠে আসে।  সিডিএ রয়েল প্লাজার ইনোভেটিভ ফোন কেয়ার নামের একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান থেকে সাজ্জাদ চোরাই মোবাইলগুলো আইএমইআই পরিবর্তন করেন আনতো। এই কাজের সাথে দোকানের মালিক হাবিবুল্লাহ মেসবাহ ও রাশেদ সরাসারি জড়িত। মেসবাহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চোরাই, ছিনতাই হওয়া মোবাইল সংগ্রহ করতো। পরে এসব মোবাইল বিভিন্ন দোকানে ও গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হতো। আসামিদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

আইএমইআই বদলে গেলে বদলে যায় ফোনঃ

আইএমইআই বদলে গেলে ফোনের মালিক ফোন শনাক্ত করতে পারলেও তিনি মালিকানা দাবি করতে পারেন না। কারণ একজন গ্রাহক ব্রান্ডেড শপ থেকে যখন একটি নতুন মোবাইল ফোন কিনে থাকেন সেটিই প্রকৃত আইএমইআই। সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেটি মুছে কিংবা বদলে ফেলা হলে কাগজে-কলমে মালিকানা দাবী করার সুযোগ নেই।  মোবাইল ফোন চুরি, ছিনতাই, হারিয়ে গেলে অথবা ফোন দিয়ে অপরাধ করলে দ্রুত অপরাধীকে শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোবাইলের আইএমইআই ট্র্যাক করে অপরাধীর অবস্থান জানতে পারে। কিন্তু অরিজিন্যাল আইএমইআই বদলে ফেললে সে মোবাইল এবং অপরাধীকে কোনভাবেই শনাক্ত করা যায়। যার ফলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সংঘটিত অপারাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আসিফ হোসেন খান চট্টলার খবরকে বলেন, আইএমইআই বদলে ফেলার কাজটি সম্পূর্ণ আন্ডারগ্রাউন্ড একটিভিটিস। জঙ্গি তৎপরতার সাথে যারা জড়িত, বিভিন্ন রকম সিভিয়ার ক্রাইমের সাথে যারা জড়িত তারাই মূলত এই ধরনের অপরাধে এসব মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়। কারণ আইএমইআই বদলে ফেললে কোনভাবেই অপরাধী শনাক্ত করা যায় ন। যেহেতু এটি আন্ডারগ্রাউন্ড একটিভিটিস এটি কোনভাবেই বন্ধ করা যাবে না। সমাজ ব্যবস্থায় অপরাধও একটা পার্ট। আর অপরাধীরা অপরাধ করবেই। এটাই ন্যাচারাল। আইএমইআই বদলে ফেলা হয় সফটওয়্যার জেনারেট করে।  এই সফটওয়্যার পাড়ার দোকানে কিভাবে পাওয়া যাচ্ছে? সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।  আইএমইআই কাটার ডিভাইস মোবাইল দোকানদাররা কি করে পেলো? কারা এসব ডিভাইস আমদানি করলো সেসব খুঁজতে হবে। এছাড়া আইফোন, কিংবা এন্ড্রয়োড ফোনের আইএমইআই কাটার জন্য বর্তমানে মোবাইল অ্যাপস পাওয়া যায়। ঘরে বসেই চাইলে আইএমইআই পরিবর্তন করা সম্ভব। ব্যক্তির সচেতনতা এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ সবার আগে প্রয়োজন।

 

এমএইচকে/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর