chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে জরায়ু ক্যান্সার রোগী

চমেকে ১ বছরে চিকিৎসা নিয়েছে ৭০০ রোগী

নারীদের যত ধরনের ক্যান্সার হয় তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার অন্যতম। ২০২১ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ৩৫০ জন চিকিৎসা নেন।  ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০ জন। যা বিগত কয়েক বছরের দ্বিগুন। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, যথাসময়ে কিশোরীদের এইচপিভি টিকা প্রদান করে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায় দাবী চিকিৎসকদের।

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে চমেক হাসপাতালে স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সারসহ মোট ২ হাজার ৯৩০ জন ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়েছেন। তারমধ্যে ৪১০ জন অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ১৪ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী। ২০২১ সালে সেই সংখ্যা ছিলো প্রায় সাড়ে তিনশ’। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০ জনের বেশি। তবে বৃহত্তর চট্টগ্রামে প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে। এরমধ্যে প্রায় ৭০০ জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারের রোগী।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগীদের রেডিওথেরাপি এবং ব্র্যাকি থেরাপি দুভাবে চিকিৎসা দিতে হয়। কোনো রোগীকে সার্জারি করাতে হয়, কোনো কোনো রোগীকে রেডিওথেরাপি এবং ব্র্যাকি থেরাপি দুটাই দিতে হয়। এছাড়া কেমোথেরাপি ও ইমিউনো থেরাপি টার্গেটেড থেরাপি দিতে হয়।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা পেতে ভোগান্তি

গত ৫ বছর ধরে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত পত্তিন্নে চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমি রাঙামাটির বাসিন্দা। এই চিকিৎসা রাঙামাটিতে ভালোভাবে পাওয়া যায় না বললেই বলা চলে। চট্টগ্রাম বা ঢাকামুখী হতে হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে আমাকে ব্র‍্যাকি-থেরাপি দিতে চিকিৎসক পরামর্শ দেন। কিন্ত তখন চট্টগ্রাম মেডিকেলে ব্র‍্যাকি- থেরাপি মেশিন বন্ধ থাকায় পড়ে যায় বিপদে। এরপর ঢাকা সরকারি হাসপাতালে সিরিয়াল দেরিতে পাওয়ায়। সবশেষে বাড়তি টাকা ও ভোগান্তি সহ্য করে ব্র‍্যাকি- থেরাপি দিতে হয়। ‘

এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালে রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে দিন দিন বাড়ছে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা। তার অন্যতম কারণ কিশোর বয়সীদের টিকা আওতায় না আনা। এছাড়া অল্প বয়সে বাচ্চা প্রসব, বহুগামিতা, জন্মবিরতিকরণ পিল খাওয়াসহ নানা কারণও রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের স্ক্রিনিং করা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা নেই। অনেক নারী জানেই না এই রোগ নিয়ে। অথচ একটু সচেতন হলে নীরবঘাতক রোগটি নির্মূল করা সম্ভব।

যারা চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের পরিবারের মেয়েদের কেন টিকা নিতে ও নিয়মিত স্ক্রিনিং করতে পরামর্শ দেওয়া হয় না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এতো রোগীর চাপ থাকে, আলাদা করে কথা বলার সময় হয়ে উঠে না। তিনি আরও বলেন, যদি প্রতিটি অফিস-আদালতে, বিদেশ গেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে স্ক্রিনিং বাধ্য করা হতো, তাহলে অন্তত মেয়েরা সচেতন হতো।

নচ|ফখ|চখ

এই বিভাগের আরও খবর