chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ভূপ্রকৃতি ধ্বংসে মেতে উঠেছে অর্থলিপ্সু প্রভাবশালী গোষ্ঠী-সুজন

চট্টলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, বেশ কয়েক বছর যাবত টিলা, পাহাড়সহ ভূপ্রকৃতি ধ্বংসে মেতে উঠেছে এক শ্রেণীর অর্থলিপ্সু প্রভাবশালী গোষ্ঠী।

বিভিন্ন আবাসিক, বাণিজ্যিক শিল্প স্থাপনা, কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানাবিধ প্রতিষ্ঠানের নামে টিলা, পাহাড় কাটার উৎসবে মেতে উঠেছে চক্রটি। রাতের আধারে তো বটে এমনকি প্রকাশ্য দিবালোকেও পাহাড় কাটার ঘটনা ঘটছে অহরহ।

মাঝে মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে ক্ষণিকের জন্য বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে পূর্ণোদ্যমে টিলা, পাহাড় কাটা চলতে থাকে। এভাবে বছরের পর বছর নির্বিচারে পাহাড় কেটে ধ্বংস করার ফলে আগামী প্রজন্মের নিকট এসব টিলা, পাহাড়ের গল্প শুধু বই পুস্তকেই লিপিবদ্ধ থাকবে।

বর্তমানে এসব পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে মুর্তিমান আতংক রূপে হাজির হয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তাকে পরিপূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছেন পরিবেশ অধিদপ্তর এবং আইনশৃংখলা বাহিনী।

চট্টগ্রামের ভূপ্রকৃতি রক্ষায় জেলা প্রশাসনের নানামূখী পদক্ষেপে অভিনন্দন জানিয়ে এ লড়াইয়ে সকলকে সামিল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন খোরশেদ আলম সুজন।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট ২০২২ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহবান জানান সুজন।

এসময় তিনি বলেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি আমাদের এই চট্টগ্রাম। ছোট ছোট টিলা এবং পাহাড়ের সমন্বয়ে এ শহরটির নৈসর্গিক সৌন্দর্য প্রথম দেখাতেই যে কাউকে মুগ্ধ করে তুলবে।

টিলা এবং পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে গাছ গাছালির অপূর্ব সম্মিলন সে সৌন্দর্যকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে নিঃসন্দেহে।

ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের জঙ্গল সলিমপুর ও আলীনগরে অভিযান চালিয়ে শত শত একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব বিশাল সরকারি খাস জমি ঘিরে নানামূখী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বর্তমান সরকার।

মূলত দীর্ঘদিন ধরে এসব বিশাল জমি এবং তৎসংলগ্ন টিলা, পাহাড় কেটে অবৈধ বসতি স্থাপন করেছে কতিপয় দখলদার গোষ্ঠী। তাই চট্টগ্রামের ভূপ্রকৃতি রক্ষায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের সাহসী পদক্ষেপে সকলকে সামিল হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, পাহাড়তলী ফয়েসলেক থেকে শুরু করে বারৈয়ারহাট পর্যন্ত রয়েছে বিভিন্ন টিলা শ্রেণী, আছে প্রাকৃতিক লেক, ছড়া ও ঝর্ণা। দেখা যাচ্ছে যে এসব প্রাকৃতিক লেক, ঝর্ণা ও টিলা বিভিন্নভাবে কিছুসংখ্যক অর্থলিপ্সু ব্যক্তির খপ্পড়ে পড়ে ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হতে চলেছে।

এসব প্রাকৃতিক সম্পদ ঐসব ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছে। তারা রাতারাতি এসব প্রাকৃতিক লেক, ঝর্ণা এবং টিলার শ্রেণী পরিবর্তন করে জমিতে রূপান্তর করছে।

তাই পাহাড়তলী ফয়েসলেক থেকে বারৈয়ারহাট পর্যন্ত আমাদের অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত যে ভূপ্রকৃতি রয়েছে সেটিকে রক্ষার জন্য আর.এস, বি.এস জরিপ অনুযায়ী একটি সমন্বিত টেকসই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটিকে কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ইতোমধ্যে পাহাড় কেটে নগরীর বায়েজিদ, খুলশীসহ বিভিন্ন এলাকায় বেআইনিভাবে যে সকল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এসব প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে অপসারণ করারও দাবী জানান তিনি।

এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবের নেতৃত্বে হেলথ জোনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো প্রতিষ্ঠা এবং নগরীর মহামূল্যবান ভূপ্রকৃতি রক্ষার যে উদ্যোগ সেটির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা গেলে একদিকে নগরীর ভূপ্রকৃতি রক্ষা হবে অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি চট্টগ্রামের অপূর্ব সুন্দর পাহাড়, নদী, টিলা, পাহাড়ী ছড়া, ঝর্ণাও ভূমিখেকোদের হাত থেকে রক্ষা পাবে। বর্তমান জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদপ্তরের যে প্রশংসনীয় তৎপরতা সেটাকে আরো বেগবান করারও আহবান জানান তিনি।

এসব ভূমি উদ্ধার করে সংরক্ষণের পাশাপাশি একটি বৃহৎ প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার অনুরোধ জানান খোরশেদ আলম সুজন।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর