chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

পদ পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানালেন শেখ হাসিনাকে, এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়

১৯৯১ সালে জামায়াত-শিবিরের দ্বারা সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছিলেন মো. শহিদুল কবির সেলিম। মৃত ভেবে তাকে ফেলে গিয়েছিল অভিযুক্তরা। প্রাণ ফিরে পেয়েও রাজনীতি ছাড়েননি। নানা সময়ে অর্ধশতাধিক মামলার আসামি হয়েছেন। ৩৮ বছর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দলের প্রয়োজনে ঘুরেছেন জনপদে জনপদে। আওয়ামী লীগে শেকড় থেকে ওঠে আসা এই রাজনীতিকের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ। তার দীর্ঘদিনের ত্যাগের সম্প্রতি মিলেছে স্বীকৃতি। গত ৪ সেপ্টেম্বর গঠিত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে কার্যনির্বাহী সদস্য করা হয়। জেলা কমিটিতে স্থান পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানালেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে। প্রত্যয় জানালেন দলকে এগিয়ে নেওয়ার।

প্রতিক্রিয়া জানতে মো. শহিদুল কবির জানান, ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। তারপর ৩৮ বছর ধরে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি। রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিকে বেশিরভাগ বিরোধী দলে ছিলাম। কখনো দলকে ছেড়ে যায়নি। দলের প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম।আপসের রাজনীতি কখনো করিনি। তাই প্রতিপক্ষের টার্গেটও ছিল আমার ওপর। হামলা-মামলা কিছুই বাদ যায়নি। সম্প্রতি দল আমাকে মূল্যায়ন করে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে রেখেছেন। এজন্য আমি জাতির পিতাকে স্মরণ করছি। এখন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সিনিয়র নেতাদের নির্দেশনা এগিয়ে যেতে চাই।

এদিকে ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪(সাবেক) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও ১৯৯৬ সালে একই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাঈনুদ্দীন হাসান চৌধুরীর পক্ষে ছাত্রলীগের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও একই আসনে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাফর আহমদ চৌধুরীর ও ২০০৮ সালে এইক আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এড.এ.কে.এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর এবং ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড.প্রফেসর আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভীর পক্ষে
যুবলীগের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড.প্রফেসর আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভীর পক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন পরিচালনা করেন। এছাড়াও ১৯৯৯১ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেছেন।

সেলিমের বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন হিরু জানান, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না, ১৯৯০ সালে সাতকানিয়া কলেজে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছে। তখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা অনেক কঠিন ছিল। নির্যাতন ও কষ্ট সহ্য করেছে, তৃণমূল পর্যায়ে দল সুসংগঠিত করতে কাজ করেছে সেলিম। আমার সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে সেলিমের সঙ্গে ভাল সর্ম্পক নয়। তবুও ভালকে ভাল বলতে হবে। সেলিমদের মতো আওয়ামী লীগের নেতা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ,যুবলীগ করে আওয়ামী লীগের কমিটিতে মূল্যায়ণ হয়েছে।

এদিকে ১৯৮৭-১৯৯২ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে প্রায় অর্ধ শত মামলায় আসামি ছিলেন সেলিম। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার ও কারাবরণ করে। ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় বাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত। ২০০২ সালে জোট সরকার কর্তৃক অপারেশন ক্লিনহার্টে লোহাগাড়া থেকে গ্রেফতার হয়ে শারীরিক নির্যাতন ও জেল বন্দী ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক মামলায় ১৯৯২ সালে সাতকানিয়া থেকে ১৯৯৮ সাল ঢাকা থেকে ২০০৫ সালে লোহাগাড়া থেকে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘসময় জেলে বন্দী ছিলেন।

সেলিমের বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান জানান, সেলিম দীর্ঘদিন যাবত আমাদের সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম রয়েছে। ১৯৯০ সালে জামায়াত-শিবিরের হামলার স্বীকার হয়েছে। এছাড়াও দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে একাধিকবার জেল জুলুম ও অনেক মামলার আসামি হয়েছে। ত্যাগী হিসেবে সেলিমকে জেলা কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর