chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

গ্যাস সংকটে কমছে উৎপাদন,লোকসানে চট্টগ্রামের শিল্পকারখানা গুলো

দিন দিন গ্যাস সংকট চরম আকার ধারণ করছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। শিল্প কারখানা, সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন এবং বাসাবাড়িতে কমেছে গ্যাসের সরবরাহ। অনেক বাসা বাড়িতে দিনের অর্ধেক সময় গ্যাস থাকছে না। গ্যাস সংকটের পাশাপাশি ৩৫ শতাংশ উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় প্রতিটনে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান গুনছে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।

চট্টগ্রামের প্রায় প্রতিটি ইস্পাত কারখানায় গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন রড উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে অনেক কারখানা ‘জ্বালানি তেল’ ব্যবহারের মাধ্যমে কারখানার ইঞ্জিন সচল রেখেছে। আবার গ্যাস না থাকায় অনেক কারখানা পাওয়ার প্ল্যান্ট চালাতে পারছে না। এ কারণে প্রায় সব কারখানায় উৎপাদন ৮শ থেকে দেড় হাজার মেট্রিকটনে নেমে এসেছে।

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে মিলছে মাত্র ২৬০ থেকে ২৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদার প্রায় অর্ধেক গ্যাস সংকট রয়েছে চট্টগ্রাম। যে পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে এরমধ্যে চট্টগ্রামের সার কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) এবং চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) ৮২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বাকিটা সরবরাহ করা হচ্ছে চট্টগ্রামের শিল্পকারখানা, সিএনজি ফুয়েলিং স্টেশন, বাণিজ্যিক এবং আবাসিকসহ সবগুলো খাতে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে বর্তমানে একেএস স্টিল, জিপিএইচ ইস্পাত, আরএসআরএম, কেএসআরএম, বিএসআরএম, সালেহ স্টিল, এসএআরএম, বায়েজীদ স্টিল, পিএইচপি ইন্টিগ্রেডেট স্টীল ব্যবসা পরিচালনা করছে। এরমধ্যে কেএসআরএম কারখানায় আগে গড়ে দুই হাজার টন রড উৎপাদন করা গেলেও বর্তমানে উৎপাদন প্রায় ৮শ থেকে ৯শ টনে নেমে এসেছে। জিপিএইচ ইস্পাত কারখানায় প্রতিদিনি গড়ে ৩ হাজার মেট্রিকটন রড উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে তা দেড় হাজার টনে নেমে এসেছে।

কেএসআরএম এর কর্পোরেট ডিরেক্টর শামসুল হক  বলেন, নির্দিষ্ট মাত্রায় তাপ না থাকলে রড প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। সকালের দিকে গ্যাসের তেমন একটা প্রেসার থাকে না। ফলে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ব্যয়ও বেড়ে গেছে। সবাই এখন টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএসআরএম এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের উৎপাদন কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবুও উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আমরা ডিজেল বা ফার্নেস অয়েল ব্যবহার করছি। এ কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যয় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। টনপ্রতি রডে উৎপাদন খরচ বাড়লেও আমরা তা বাজারমূল্যের সঙ্গে যোগ করছি না। তাই এখন প্রতিটনে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মত লোকসান দিতে হচ্ছে।

গ্যাস সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অপারেশন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, হ্যাঁ এটা ঠিক যে বর্তমানে আমাদের গ্যাস সংকট চলছে। আমাদের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে তার তুলনায় যোগান কম। তবে এ সংকট উত্তরণে আমরা এলএনজি আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলছি। গ্যাসের সংকট চলতি বছর পর্যন্ত থাকবে। আশা করছি, এরপর আর কোন সংকট থাকবে না।

চখ/জুইম

এই বিভাগের আরও খবর