chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ইতিহাস গড়া জয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

গত বছর প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর চলতি সফরে এসে ওয়ানডেতেও জয় পেয়েছে টাইগাররা। তাসমান পাড়ের এই দেশটায় কেবল টি-টোয়েন্টিতেই জয়হীন ছিল বাংলাদেশ। এবার সেই আক্ষেপ ঘুচেছে। ৫ উইকেটের জয়ে ইতিহাস গড়ে সিরিজ শুরু করেছে টাইগাররা।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৮ রান এসেছে জিমি নিশামের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে ২৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। জবাবে খেলতে নেমে ১৮ ওভার ৪ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। এলো-মেলো ব্যাটিংয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন রনি তালুকদার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মিলনেকে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭ বলে ১০ রান।

রনি দ্রুত ফিরলেও তিনে নেমে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। উইকেটে এসে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করেছেন তিনি। কিন্তু আরো একবার থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ১৪ বলে ১৯ রান করে মিড অফে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন সৌম্য। ওয়ানডের ফর্মটাই যেন টি-টোয়েন্টিতে টেনে এনেছেন তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার ঝোড়ো শুরু করেছিলেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। নবম ওভারে বেন সিয়ার্সের ‘ইউ মিস আই হিটে’ লাইন মিস করেন সৌম্য, বল আঘাত হানে সরাসরি স্টাম্পে। সৌম্যের ব্যাট থেকে এসেছে ১৫ বলে ২২ রান। সৌম্য ফিরলে তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দেখে-শুনে ব্যাটিং করেন লিটন দাস। প্রয়োজনীয় রান রেট অনুসারেই ব্যাটিং করছিলেন তারা। তাই ক্রমশই ম্যাচ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলো কিউইরা। তবে ১৪তম ওভারে হৃদয়কে ১৯ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন স্যান্টনার। পরের ওভারেই ফেরেন আফিফ হোসেনও। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ।

 

 

সেই চাপ পাকা হাতে সামাল দিয়েছেন লিটন। শেখ মেহেদি তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত লিটন অপরাজিত ছিলেন ৩৬ বলে ৪২ রান করে। আর মেহেদির ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ১৯ রান।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ বলে টিম সেইফার্টকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন শেখ মেহেদি। অফ স্টাম্পের ওপর খানিকটা খাটো লেন্থে সোজা বল করেছিলেন এই অফ স্পিনার, টার্নের আশায় খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেছেন সেইফার্ট।

দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে রীতিমতো আগুন ঝরান শরিফুল। ওভারের দ্বিতীয় বলটি লেন্থ ডেলিভারী ছিল এই বাঁহাতি পেসারের। সেখানে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে সৌম্যের হাতে ধরা পড়েন ফিন অ্যালেন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১ রান।

পরের বলেও উইকেট পেয়েছেন শরিফুল। এই বাঁহাতি পেসারের লেগ স্টাম্পের ওপর করা বল ভেতরের দিকে ঢোকার সময় ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন গ্লেন ফিলিপস। ব্যাটে খেলতে পারেননি, বল আঘাত হানে তার প্যাডে। তবে লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। তাতে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয়েছেন আম্পায়ার। গোল্ডেন ডাক খেয়ে ফিলিপস ফিরলে ১ রানেই ৩ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

 

Shoriful Islam caused all sorts of problems for the New Zealand batters, New Zealand vs Bangladesh, 1st T20I, Napier, December 27, 2023

 

শুরুর ধাক্কা সামলে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন ড্যারিল মিচেল ও মার্ক চ্যাপম্যান। কিন্তু টপ অর্ডার ব্যর্থতার দিনে দায়িত্ব নিতে পারেননি মিচেলও। এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মেহেদি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৫ বলে ১৪ রান।

ইনিংসের দশম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসেন রিশাদ হোসেন। আক্রমণে এসেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন এই লেগ স্পিনার। রিশাদের ফুল লেন্থের বলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ কভার পয়েন্টে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন চ্যাপম্যান।

এরপর স্যান্টারকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটির পথে এগোচ্ছিলেন নিশাম। ১৫তম ওভারে স্যান্টনারকে ফিরিয়ে ৪১ রানের জুটি ভাঙেন শরিফুল। অবশ্য সেখানে বড় অবদান সৌম্যের। মিড উইকেটে সামনে দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। খালি চোখে আম্পায়ার বুঝতে পারেননি, আসলে কি ঘটেছে। এরপর থার্ড আম্পায়ার বেশ কয়েকবার দেখে আউটের সিদ্ধান্ত দেন।

৯১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও কিউইদের আশার আল হয়ে এক প্রান্তে জ্বলছিলেন নিশাম। ৪৮ রানে তাকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজ। নিশাম ফেরার পর রানের গতি কমে স্বাগতিকদের। শেষ পর্যন্ত ১৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি তারা।

 

 

 

 

জয়/চখ

এই বিভাগের আরও খবর