chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

চিয়া সিড পুষ্টিকর একটি খাদ্য উপাদান। ছোট এ দানা বা বীজকে সুপার ফুডও বলা হয়। ছোট্ট দানাদার এ খাদ্যশস্যটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে প্রচুর পরিমাণে শক্তি সরবরাহ করে। এতে আছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালংশাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩।

বয়স ধরে রাখতে কে না চায় তবে অনেকের বয়সের আগেই রিংক্যাল পড়ে যায়, বয়স বেড়ে যায়। চিয়া সিড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর বলে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল দূর করে এন্টি এজিং উপাদান তৈরিতে সাহায্য করে ফলে বয়সের আগেই রিংকেল পড়ে না। চিয়া সিড খেলে শরীরের ত্বক টান টান এবং সতেজ থাকে।

চিয়া সিড ওবেসিটি বা ওজনাধিক্য কমাতে সাহায্য করে। এর চর্বির শোষণ ক্ষমতাও অনেক বেশি। যার ফলে ফ্যাটি লিভার হওয়ারও ঝুঁকিও অনেকাংশে কমে যায়। এমনকি হৃদরোগ হওয়া থেকেও প্রতিহত করতে পারে এ ছোট্ট দানাটি। চিয়া সিডে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস যা হাড়কে মজবুত ও শক্ত রাখতে সাহায্য করে। অস্টিওপোরোসিস আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি হাড়ের সমস্যা থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। ব্লাড সুগারও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এ ছোট্ট দানাটি। তাই ডায়াবেটিক পেশেন্টদের খাদ্য তালিকায় এক চা চামচ চিয়া রাখলে তার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে খুব সহজে।

চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ:

পুষ্টিবিদরা চিয়া সিডকে সুপারফুড নামে ডাকতে ভালোবাসেন। কারণ এতে আছে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।

চিয়া সিড পুষ্টিকর খাবার। এতে আছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩।

পুষ্টিকর এই খাবারটি সপ্তাহের সাত দিনই খাওয়া যায়। তবে ৩-৪ দিন খেলেও শরীরে উপকারে আসে।

চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা:

পুষ্টিবিদরা জানান, চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-৩ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে কাজ করে। দিনে দুই চা চামচ চিয়া সিড শরীরের শক্তি দেয় এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে। মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি রক্তে চিনির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে বলে ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমে।

হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় চিয়া সিড দারুণ কাজ করে। কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। চিয়া সিড কোলন পরিষ্কার রাখতে কাজ করে বলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।চিয়া সিড শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে আনে। দূর করে অ্যাসিডিটির সমস্যা।

চিয়া সিড ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করেন চিকিৎসকরা। শুধু কি তাই! হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা কমায়। সুন্দর রাখে ত্বক, চুল ও নখ।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম:

চিয়া সিড স্বাদ ও গন্ধবিহীন একটি খাবার। এটা খাওয়ার জন্য রান্না করারও দরকার হয় না। পানিতে ভিজিয়ে সহজেই খাওয়া যায় চিয়া সিড। চাইলে ওটস, পুডিং, জুস, স্মুথি ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নেয়া যায়। এ ছাড়া কেউ চাইলে টকদই, সিরিয়াল, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন।

চিয়া সিড কুসুম গরম পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে চিয়া সিডসহ পানীয়টি পান করুন।

চাইলে স্মুথি বানিয়ে খাওয়া যায়। টক দই, চিয়া সিড ও শসা দিয়ে স্মুথি বানিয়ে বিকেলে নাশতা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে সুপারফুডটি।২ কাপ নারকেলের পানির সঙ্গে পছন্দের ফলের রসের সঙ্গে ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ চিয়া বীজ দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে নিন। প্রয়োজনে পানিও যোগ করতে পারেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে খেয়ে নিন।

এভাবে নানা জাতীয় রেসিপি করে খাওয়া যেতে পারে এ সুপার ফুড চিয়া সিডটি, একদিকে যেমন মুখের স্বাদ বাড়াবে তেমনি পুষ্টির চাহিদাটাও পূরণ হবে।

তাসু/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর