chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

খোলা খাবার থেকে ছড়াচ্ছে ডায়রিয়া!

দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপদাহ। চৈত্রের বিদায়বেলায় শুরু হওয়া চলমান এই তাপদাহে দেশজুড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সেই সাথে বাড়ছে ডায়রিয়া প্রকোপ। গরমে একটু স্বস্তির জন্য পথে-ঘাটে বিক্রি করা খোলা শরবত, খাবার খাওয়া বাড়িয়েছে পথচারীরা। এ খোলা খাবার থেকে ডায়রিয়া ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তার।

তিনি চট্টলার খবরকে বলেন,আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে মানুষের কাজের চাপ। কেউ শপিংয়ে, কেউ ব্যবসার কাজে দীর্ঘ সময় বাইরে থাকছে। বাইরে বিক্রি করা ঠান্ডা শরবত দিয়ে গলা ভিজিয়ে নিচ্ছে পথচারীরা। সেই খাবারে রয়েছে জীবাণু। বাড়াচ্ছে রোগ বালাই। তারমমধ্যে ডায়রিয়া অন্যতম।

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কিছুতা কম ছিলো। হাসপাতালে ১ মার্চ ডায়রিয়া ভর্তি হয় ২৭ জন, ২মার্চ-২০জন, ৩ মার্চ- ৩০জন, ৪ মার্চ-৩০জন, ৫ মার্চ-২৪জন, ৬ মার্চ- ২২জন, ৭ মার্চ-২২জন, ৮ মার্চ-২৬জন, ৯ মার্চ-৩৩জন, ১০ মার্চ-৩২জন, ১১ মার্চ-৩১জন, ১২ মার্চ-৩১জন, ১৩ মার্চ-২৫জন, ১৪ মার্চ-২২, ১৫ মার্চ-২৯জন, ১৬ মার্চ-২০জন, ১৭ মার্চ-৩৯জন, ১৮ মার্চ-৩১জন, ১৯ মার্চ-৩১জন আক্রান্ত হন।

এছাড়া ২০ মার্চ-২১জন, ২১ মার্চ-২৫জন, ২২ মার্চ-২৯জন, ২৩ মার্চ-২০জন, ২৪ মার্চ-২৩জন, ২৫ মার্চ-২৪জন, ২৬ মার্চ-২৯জন, ২৭মার্চ-৩৫জন, ২৮ মার্চ- ৩১জন,২৯ মার্চ-৩৪জন, ৩০ মার্চ-২৮জন এবং ৩১ মার্চ-৩৭জন আক্রান্ত হন।

এপ্রিলে এসে সেই সংখ্যাটা হু হু করে বাড়ছে ১ এপ্রিল ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয় ৩৬ জন, ২ এপ্রিল ৩১জন, ৩ এপ্রিল ২৬ জন, ৪ এপ্রিল ৪২ জন, ৫ এপ্রিল -৪০জন, ৬ এপ্রিল ৩৭ জন, ৭ এপ্রিল-৪২ জন, ৮ এপ্রিল- ৩৬ জন, ৯ এপ্রিল -৩৯ জন, ১০ এপ্রিল- ৪১জন, ১১ এপ্রিল- ৩২ জন, ১২ এপ্রিল- ৩৫ জন, ১৩ এপ্রিল-৩২ জন, ১৪ এপ্রিল -৩৯ জন এবং ১৫ এপ্রিল ৫৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। গরম যত বাড়ছে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

চট্টগ্রাম জেলার সাথে উপজেলাও বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ উপজেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ২১৫ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পটিয়া উপজেলায় ৩৭ জন রোগী ভর্তি হয়। অন্যান্য উপজেলার মধ্যে আনোয়ারায় ২৮ জন, বোয়ালখালীতে ২৭ জন, চন্দনাইশে ১৭ জন, বাঁশখালীতে ১৭ জন, লোহাগাড়ায় ১২ জন, সাতকানিয়ায় ১৩ জন, সীতাকুণ্ডে ১০ জন, মীরসরাইয়ে ৮ জন, হাটহাজারীতে ৮ জন, রাউজানে ৮ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১২ জন, ফটিকছড়িতে ১৪ জন, সন্দ্বীপে ৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে কর্ণফুলী উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত কোনো রোগী ভর্তি হয়নি।

চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তার আরও বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধে প্রাপ্ত বয়স্করাও গরমের এই সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। তার প্রধান কারণ বাইরের খাবার খাওয়া। গরম পড়লে আমরা সাধারণত বাইরে বিক্রি করা বিভিন্ন শরবত খাই। কিন্ত সেগুলো তো নিরাপদ না। ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। সুতরাং গরম পড়লে খোলা জায়গায় বিক্রি করা ঠাণ্ডা শরবত খাওয়া যাবে না।

পাতলা পায়খানা শুরু হলে সবার আগে পানি শূন্যতা পূরণ করতে হবে। তার জন্য স্যালাইনকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ স্যাল্যাইনের মধ্যেই সব উপকরণ থাকে। এক্ষেত্রে ডাবও ভালো। তবে সেখানে সব উপকরণ বিদ্যমান নেই। বেশি পরিমাণে স্যালাইন খেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা ডায়াবেটিস এবং রক্তের চাপে ভোগেন তারা স্যালাইন খান না। তারা মনে করেন স্যালাইন খেলে ডায়াবেটিস এবং রক্তের চাপ বেড়ে যাবে। কিন্ত ডায়রিয়া হলে সবার আগে স্যালাইন খেতে হবে। না হলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। স্যালাইন বেশি পরিমাণে খেয়ে অন্যান্য ওষুধ চালিয়ে নিতে হবে।

নচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর