chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

রাতের আধাঁরে সড়ক কাটলে কঠোর প্রদক্ষেপ নিব: মেয়র

নগরে নির্মাণ করা সড়ক রাতের আঁধারে কেটে ফেলার অভিযোগ কোনো সংস্থার  বিরুদ্ধে পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন চসিক মেয়র  বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। 

তিনি বলেন, চলমান স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কারণে ওয়াসার সড়ক কাটতে হচ্ছে। শুধু ওয়াসা নয়,  যে কোনো সংস্থাকে সড়ক কাটার আগে অবশ্যই চসিক থেকে লিখিতভাবে অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে যথাযথ প্রাক্কলনের মাধ্যমে চসিকের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে।  মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চসিকের নির্বাচিত ৬ষ্ঠ পরিষদের ২৫তম সাধারণ সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। সভায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন।

চসিক মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী চসিকের ইতিহাসের সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে টানেল থেকে শুরু করে ফ্লাইওভার নির্মাণসহ ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। এসব প্রকল্পের সঙ্গে চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। তবে সেবা সংস্থাগুলো চসিকের সঙ্গে সমন্বয় না করলে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল হুমকির মুখে পড়বে। আমরা সড়ক বানাবো আর সংস্থা গুলো রাতের আঁধারে নতুন রাস্তা কেটে ফেলবে, এমন হতে দেওয়া যাবে না।

সভায় একাধিক কাউন্সিলর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)’র জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের জন্য বাঁধ নির্মাণ করায় বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সিডিএকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা। তারা গৃহকর নিয়ে একটি মহল গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় সিডিএ’র রিটেনিং ওয়ালের কারণে নালা-খাল ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নগরের অনেক স্থানে মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছেন। নাগরিকদের কষ্ট দূর করতে আমি সংস্থাটির সঙ্গে কথা বলেছি। তবে সিডিএ এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। গৃহকর নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে আপিলের মাধ্যমে কর নেয়া হচ্ছে। জনগণ গৃহকর দিয়ে হাসিমুখে ঘরে ফিরছে।

সভায় প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিল ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এসময় আলোচনার প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, নগরীকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। রাজস্ব আয়ের অর্থকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সড়ক ও ওয়ার্ড কার্যালয়গুলো সংস্কার করা হবে। বিশ্বব্যাংক থেকে ২৭৫ কোটি টাকার কোভিড রেসপন্সের অর্থকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো হবে।

রেজাউল করিম আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্থায়ী কার্যালয় না থাকায় নাগরিক সেবা প্রদানে সমস্যা হচ্ছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি চসিকের নিজস্ব ফান্ডে স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ করব। প্রকল্প কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একজন ঠিকাদারকে এক টেন্ডার নোটিশে একাধিক কাজ দেয়া হবে না। আর যেসব ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করতে পারবেনা তাদের কালো তালিকাভুক্ত করব। আমি কঠোর না হলে পিসি রোড হতোনা। ঝুঁকি নিয়ে কঠোর হওয়ার কারণে পিসি রোডের কাজ শেষ করতে পেরেছি। অনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত ঠিকাদারদের ছাড় দিবনা। কর্মকর্তাদেরও সতর্ক করছি কারো গাফিলতির জন্য জনদুর্ভোগ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিব।

মেয়র উল্লেখ করেন, কেবল বস্তুগত উন্নয়ন নয়, সার্বিক উন্নয়নের জন্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রমও বাড়ানো হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বড় পরিসরে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন মোড়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ম্যুরাল নির্মাণের পাশাপাশি কৃতি সন্তানদের নামে সড়ক ও স্থাপনাসমূহের নামকরণ করা হবে। নাগরিকদের অবসর সময়কে আনন্দময় করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে শিশুপার্ক  ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে নান্দনিক শহরে পরিণত করা হবে।

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিরা তাদের নিজ নিজ স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন। এসময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিল, সচিব খালেদ মাহমুদসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আরকে/ সাআ / চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর