chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে ভোগান্তি চট্টগ্রামবাসীর পিছু ছাড়ছে না

গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামবাসীও আজ দিশাহারা। বছরের অর্ধেক সময় চট্টগ্রামের অধিকাংশ স্থান পানির নিচে ডুবে থাকে। এ নগরে হরহামেশা ড্রেনে পড়ে নাগরিকের অপমৃত্যু ঘটে।

রাস্তা-ঘাট, পয়ঃনিষ্কাশন ও সড়কবাতির বেহাল দশা! এখানে ন্যূনতম নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। তার উপর হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে ভোগান্তি চট্টগ্রামবাসীর পিছু ছাড়ছে না।

গলাকাটা হোল্ডিং ট্যাক্স আইন বাতিলের দাবিতে আজ শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) নগরীর কদমতলী আবুল খায়ের মেম্বার চত্বরে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত গণসমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে এমনকি বাংলাদেশের কোনো সিটি কর্পোরেশন বা পৌর এলাকায় বাড়ি ভাড়ার আয়ের উপর হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করার নজীর নেই।

চট্টগ্রামবাসী বাড়িভাড়ার আয়ের উপর বিধি মোতাবেক ‘ইনকাম ট্যাক্স’ দেন- একই আয়ের উপর গৃহকর-নির্ধারণ, এক মুরগিকে দু’বার জবাই করার মত অযৌক্তিক।

বর্তমান মেয়র মহোদয় তাঁর নির্বাচনী প্রচারে হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়ানোর বিষয়টি এলাকায় এলাকায় গিয়ে বার বার প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি তা রাখছেন না। এখন তিনি বলছেন আপিল করলে হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে দেবেন। পূর্বের কর ৭/৮ গুণ বৃদ্ধি করে আপিলের কথা বলে মূলত তিনি ঘুষ বাণিজ্যের বিশাল দ্বার উন্মোচন করেছেন।

বক্তারা আরো বলেন, কিছু লোক ঘুষ দিয়ে এই অসহনীয় গৃহকর কিছুটা কমিয়ে পরিশোধ করার চেষ্টা করছেন। দুদকের গণশুনানিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আমাদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে।

তারা চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের উদ্দ্যেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, দুর্নীতি ও আপিলের মাধ্যমে এবছর হয়তো মেয়র মহোদয় ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ছাড় দিচ্ছেন-আগামীতে ও কি এ ছাড় পাওয়া যাবে? তখন তো ৭/৮ গুণ বেশি ট্যাক্স দিতেই হবে।

এ ট্যাক্স দিতে ব্যর্থ হবার কারণে চট্টগ্রামের মানুষ ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে রোহিঙ্গাদের ভাগ্য বরণে বাধ্য হবে। ভাড়াভিত্তিক এ অসহনীয় হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে রাজধানী ঢাকা শহরকে বাদ দিয়ে চট্টগ্রামে কেন বার বার পরীক্ষা চালানো হয় তারও সঠিক কোন যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।

বক্তারা অবিলম্বে আপিল বাণিজ্য বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচারী আমলে চট্টগ্রাম বিদ্বেষী আমলা কর্তৃক প্রণীত এ হোল্ডিং ট্যাক্স আইন (যা সংসদেও পাস হয়নি) বাতিলপূর্বক সাবেক নিয়মে ট্যাক্স নেওয়ার জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করার মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে।

তাই অবিলম্বে “ The Municipal Corporation Taxation Rules 1986 ” বাতিল এবং নতুন আইন প্রণয়ন করে ভাড়া নয় আয়তনের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংগঠনটি গলাকাটা হোল্ডিং ট্যাক্স আইন বাতিল করো, দৈর্ঘ্য-প্রস্তু গুণ করো তার উপরে কর ধরো এ প্রতিপাদ্যে গত ২৩ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণের কাছ থেকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে ৩০ আগস্ট বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছেন।

তাছাড়া ২০১৬ সালে বাড়ি ভাড়ার আয়ের উপরে ১৭ শতাংশ হারে তৎকালীন মেয়র গলাকাটা গৃহকর নেয়ার যে তোড়জোড় শুরু করেছিলেন তখন চট্টগ্রামের মানুষ ‘ করদাতা সুরক্ষা পরিষদ ‘ এর ব্যানারে তীব্র আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলে।

যা সারা দেশে এমনকি জাতীয় সংসদ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এই আন্দোলনের তীব্রতায় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে গলাকাটা এই অ্যাসেসমেন্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্থগিত করা হয়।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর