chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

নিরাপদে আছে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র জাহাজে আটকে পড়া নাবিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউক্রেনে অলিভিয়া বন্দরে আটকে পড়া ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলার পর সেখানে অবস্থান করা  ২৮ জন নাবিক-ক্রু সবাই নিরাপদে আছে বলে জানালেন বিএসসির সিপিং কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক পীযুষ দত্ত।

বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বেলা ১১ টায় চট্টগ্রামের সিপিং কর্পোরেশন ভবনে জাহাজের সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, জাহাজটি ফিরিয়ে আনতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। কীভাবে তাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা যায় সেটি দেখা হচ্ছে। তবে জাহাজে থাকাই এখন সব থেকে নিরাপদ। যুদ্ধের কারণে জাহাজে অবস্থান করা নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে জাহাজে থাকা ক্লুদের ফিরিয়ে আনতে সিপিং করপোরেশন ভিড় করছেন স্বজনরা। তারা দ্রুত তাদের স্বজনদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

বিএসসির সিপিং করপোরেশন এক বিবৃতিতে জানায়, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এম ভি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি বিএসসি’র বহরে যুক্ত হয়। এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে সাধারণ পণ্য পরিবহন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় ডেনিস ভিত্তিক চার্টারার ডেল্টা কর্প এর সিংগাপুর অফিস জাহাজটি পণ্য পরিবহনের জন্য ভাড়া নেয়।

এ কারণে ভারত থেকে স্টিল কার্গো নিয়ে তুরস্কের বিভিন্ন বন্দরে ডিসচার্জ করে। সর্বশেষ তুরস্কের ইরাগলি বন্দর থেকে কার্গো ডিসচার্জ শেষে করে গেল ফেব্রুয়ারিতে পণ্য বোঝাইয়ের উদ্দেশ্যে ইউক্রেনের অলডিয়া বন্দরে যায়।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি  আউটার অ্যাংরেজে পৌঁছায়। পরবর্তীতে ২৩ ফেব্রুয়ারি পাইলটের মাধ্যমে একত্রে ২১টি জাহাজ কনভয় আকারে ইনার অ্যাংরেজে পৌঁছায়।

গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫ টায় রাশিয়া রকেট  আক্রমণ করলে লোডিং অনতিবিলম্বে বাতিল করে জাহাজটি সেল আউট করার জন্য চার্টারার এবং বিএসসি থেকে মাস্টারকে নির্দেশনা প্রদান করে।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো বন্দরে প্রবেশ করলে বন্দর ত্যাগের অনুমতি ও বন্দর নির্ধারিত পাইলটের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওই সময় বন্দর পাইলট প্রদান ও অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। ফলে জাহাজের নাবিক প্রায় ৬০ নটিকেল মাইল চ্যানেল যার মধ্যে ৭ টি বিপদজনক বাঁক দিয়ে পাড়ি দেওয়া পাইলট ছাড়া নেভিগেশন নিরাপদ মনে না করায় পরের দিন সকালের জন্য অপেক্ষা করেন।

কিন্তু চ্যানেলে রাশিয়া মাইন বসানো হয়েছে মাস্টারের কাছে সংবাদ থাকায় তিনি সেলিং বাতিল করেন। পরবর্তীতে জাহাজটি সেখানে অবস্থান করছিল।

গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫ টায় ব্রীজে রকেট হামলা হয় এবং ব্রীজে আগুন ধরে যায়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। কিন্তু থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলার বেতাগী থানা এলাকায়।

তবে নাবিক ও ক্রুরা নিরাপদে আছেন। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে  জাহাজে বিদ্যুৎ, খাদ্য, পানীয়, বাংকার ( জ্বালানী ) পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুদ থাকায় বাহিরের চেয়ে নিরাপদ বিবেচনায় জাহাজে অবস্থান শ্রেয় হওয়ায় ক্রুরা জাহাজে অবস্থান করছেন।

প্রতিনিয়ত জাহাজের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জাহাজটি কিভাবে নিরাপদে সরিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পোলান্ড বাংলাদেশ অ্যাম্বেসি, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরসহ সকলে কাজ করছেন।

 

আরকে/নচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর