chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শীঘ্রই নগরীর ফুটপাতগুলোকে অবৈধ দখলদারমুক্ত করো হবে : চসিক মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীতে সরকারের যে সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে সেগুলো যেন ঝুঁকি ও ঝামেলামুক্ত থাকে, নাগরিক নিরাপত্তা বিঘ্ন ও জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় এবং নিবিঘ্নে কাজগুলো সম্পাদন হতে পারে সেজন্য সকল সেবা সংস্থার সমন্বয় অত্যাবশ্যক।

তিনি খুব শীঘ্রই নগরীর ফুটপাতগুলোকে অবৈধ দখলদারমুক্ত করে জন চলাচলে উপযুক্ত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনে কে.বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চসিক ৬ষ্ঠ পরিষদের ১০ম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি নগরীর বাজারগুলোকে পরিবেশ হানিকারক পলিথিনমুক্ত করার জন্য বুধবার (১ ডিসেম্বের) থেকে যে কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে তা সফল করতে নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। পলিথিনে পরিবর্তে পাটের বা কাপড়ের তৈরিকৃত থলে ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়া নগরীতে মশার উপদ্রব যেহারে বেড়েছে তা থেকে পরিত্রাণের জন্য মশক নিধনের কার্যকর ওষুধ ছিটানো সহ নালা-নর্দমা ও ঝোপ-ঝাড়সমূহ পরিকল্পিত ও সঠিক তদারকীর মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতার অভিযান ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু করা হবে বলে সভাকে অবহিত করেন। যে সকল রাস্তা গলি ও উপগলি বৃষ্টিজনিত কারণে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে তা প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে সংস্কার এবং যেখানেই খানা-খন্দক দৃশ্যমান হবে তা দ্রুততার সহিত সংস্কারের জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে যেখানে খাল, নালা মাটি ভরাট হয়ে জলজটের কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল সে স্থানগুলোকে চিহ্নিত করে এই শুষ্ক মৌসুমে মাটি উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনে চসিকের জনবলের বাইরেও শ্রমিক নিয়োগ করে এই কাজটি সম্পাদন করতে স্ব স্ব ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান।

মেয়র আরো বলেন, আমি পরিচ্ছন্ন নগরী দেখতে চাই। পরিচ্ছন্ন বিভাগে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করার পরেও চট্টগ্রাম নগরী পরিপূর্ণভাবে পরিচ্ছন্ন নগরী হয়ে উঠতে পারেনি, যা কোন অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কাজে যারা নিয়োজিত আছে তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে বলেন, কোন ধরণের গাফিলতি দৃশ্যমান হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ার উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ফুটপাতগুলোকে যতবারই দখলমুক্ত করা হয়েছে তা ততবারই আবারও বেদখল হয়ে যায়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। তারা আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। মেয়র বিজয় দিবসের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বুধবার থেকে বিজয়ের মাস শুরু হচ্ছে। এই বিজয় মাসটির তাৎপর্য অন্য বিজয় মাসের চাইতে ভিন্ন। এই বছরে মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসাথে পালিত হবে। চট্টগ্রাম সবসময়ই সবকিছুতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে এবারও সে দৃষ্টান্ত চসিক স্থাপন করবে।

প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়, চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্থাপনাগুলোকে নান্দনিক আলোক সজ্জায় সজ্জিতকরণ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার ও খেতাব প্রাপ্ত ১৫০জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হবে বলে মেয়র সভাকে এবিষয়ে অবহিত করেন। সভায় সিটি কর্পোরেশনের মার্কেট ও দোকানসমূহে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন, আবাসিক এলাকায় অনুমতিবিহীন গেইট ও স্লেভ অপসারণ, সৌন্দর্য্যবর্দ্ধনে নীতিমালা প্রণয়ন, বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, নগরীর সবুজায়ন উদ্ধারকরণ সহ সাতটি রাস্তা সম্প্রসারণ, চসিক উন্নয়ন কাজ চলাকালে নির্ধারিত স্থানে সাইনবোর্ড স্থাপন, যান্ত্রিক বিভাগের গাড়িগুলো মেরামতের জন্য মাদারবাড়িতে শেড তৈরি করাসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।

নচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর