চিটাগাং চেম্বারে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে কোরিয়ান রাষ্ট্রদূতের মতবিনিময়
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লী জাং কেউন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে চিটাগাং চেম্বারের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।
রবিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে মতবিনিময় সভায় চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন, কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মোস্তফা কামাল, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, দৈনিক আজাদী’র সম্পাদক এম. এ. মালেক, দৈনিক পূর্বকোণ’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন ও সাজির আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (হার্বার এন্ড মেরিন) কমোডর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কোরিয়া ট্রেড সেন্টার’র ডাইরেক্টর জেনারেল কিম ডং হাইঅন, চট্টগ্রাম কোরিয়ান কমিউনিটির সভাপতি জিন হিউক পাইক, কোরিয়ান ইপিজেড প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর সাদত, চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র পরিচালক শারমিন আক্তার, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস’র যুগ্ম কমিশনার তোফায়েল আহমদ, বিএসআরএম গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহুসেইন, উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক ডা. মুনাল মাহবুব এবং অপর সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা বক্তব্য রাখেন।
কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত লী জাং কেউন বলেন, বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্য চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করে বলেন, বাংলাদেশী প্রায় ৯৫% পণ্য কোরিয়ান বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে। বাংলাদেশ-কোরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম ওডিএ গ্রহণকারী দেশ। তবে আগামী দিনগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে উভয়দেশ ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিকভাবে আরো সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারে উল্লেখ করে আগামী বছর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী ব্যাপকভাবে উদযাপন করা হবে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান বিনিয়োগকারী দেশ যার পরিমাণ প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার। কোরিয়াতে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩৫০ মিলিয়নের কম। পক্ষান্তরে, কোরিয়া থেকে আমদানি প্রায় এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশী। কাজেই এই বিশাল বাণিজ্যঘাটতি মেটাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কোরিয়া প্রায় ১২-১৩ বিলিয়ন ডলারের তৈরীপোশাক আমদানি করে থাকে। যেখানে বাংলাদেশ থেকে কোরিয়াতে রপ্তানি হয় মাত্র ৩০০ মিলিয়ন ডলারের তৈরীপোশাক। কাজেই আমাদের তৈরীপোশাক রপ্তানিতে রুলস অব অরিজিন সহজীকরণ, প্রধান আমদানিকারকদের সাথে বাংলাদেশী
রপ্তানিকারকদের যোগাযোগ স্থাপন এবং যৌথ উদ্যোগে আরএমজি ও টেক্সটাইল খাতে কারখানা স্থাপন করে কোরিয়া বাংলাদেশী পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
সভায় অন্যান্য বক্তারা ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা সহজীকরণ, চট্টগ্রামে একটি কোরিয়ান হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মরতদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে কোরিয়া গমণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদান, দক্ষ জনবল সৃষ্টি করে কোরিয়াতে আমদানি করা, চট্টগ্রামে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কোরিয়ান একই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ কর্মসূচী চালু করা, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও সামুদ্রিক অর্থনীতির সুবিধা আদায়ে একসাথে কাজ করা, কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা প্রদান, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এর উদ্যোগ গ্রহণ করা, স্ক্র্যাপসহ অন্যান্য আমদানিতে ব্যয় হ্রাস করা, সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, খেলাধুলাতে সহায়তা বৃদ্ধি, কৃত্রিম তন্তুর মাধ্যমে ফেব্রিক্স উৎপাদনে কারিগরি সহযোগিতা, স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস, কোরিয়ান মেলা, কোরিয়ান ইন্টার্ণ প্রেরণ, মহিলা উদ্যোক্তা তৈরীতে সহযোগিতা ও তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিতকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এসএএস/এমআই