chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আতঙ্ক উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে চলছে ঈদপ্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার ভয়াল থাবার মাঝেও থেমে নেই ঈদ প্রস্তুতি। সকল আতঙ্ক উপেক্ষা করেই চলছে চট্টগ্রামে জনসাধারণের ঈদপ্রস্তুতি। শপিংমল, হাইওয়ে, ভোগ্যপণ্যের বাজার সব জায়গাতেই নজরে আসছে মানুষের হুমড়ি খেয়ে পড়ার দৃশ্য।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সারাদেশকে গ্রাস করে নেওয়ার পর সরকার কর্তৃক সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা করা হয়। দেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, তাদের মাঝেই নেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা। শপিংমল খুলে দেওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে নগরবাসী। যার ফলে নতুন করে তৈরি হয় শঙ্কা। এত এত শঙ্কার মাঝেও থেমে থাকেনি মানুষের ঈদ শপিং। এরমাঝেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছিলো চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তারপরেও মানুষের মাঝে ছিলোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা আন্দোলনের মাধ্যমে শপিংমল চালু করতে সমর্থ হলেও পর্যাপ্ত ব্যবসা তাদের হপ্যনি বোলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দেশের সকল শপিংমলগুলোতে উপচে পড়া ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভীড় করার চিত্র। মাস্ক পরিধান করে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে সকলের সমাগম হও্যার নিয়ম বেঁধে দেওয়া হলেও, মানার বালাই ছিলোনা কারো) মাঝেই। নগরীর বিপণী বিতান, জহুর হকার্স মার্কেটসহ সকল শপিংমলগুলোতেই ছিলো একই অবস্থা।

বিপণী বিতানের ক্রেতা আফসানা সুলতানা বলেন, ‘বছরের এক মৌসুমেই সাধারণত শপিং করে থাকি। এছাড়া আর শপিং করা হয়ে উঠেনা। এখন যদি শপিং না করি তাহলে সারাবছর আর করা হবেনা। টাকা অন্যকাজে খরচ হয়ে যাবে এখন যদি শপিং না করি।’

একই মার্কেটের ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ক্রেতাদের মাঝে ক্রয় করার প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু যেই পরিমাণ ক্রেতা মার্কেটে দেখা যাচ্ছে সেই পরিমান বিক্রি আমাদের হছেনা। যা ব্যবসদা হচ্ছে ঈদ উপলক্ষে তা পর্যাপ্ত নয়। আর স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই সচেতন না হলে মানা সম্ভব নয়। আমরা আমাদের দিক থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি স্বাস্থ্যবিধি মানতে।’

নগরীর আউটার পয়েন্টগুলোতে চলছে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফিরে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। হাইওয়ের সকল গাড়ি বন্ধ থাকলেও থেমে নেই মানুষের ঈদযাত্রা। বিভিন্ন কৌশলী পন্থা অবলম্বন করে যাত্রীদের নিয়ে সিটি গেইট ও নতুন ব্রীজ পার হচ্ছেন গাড়ীচালকেরা। যদিও তা রুখতে প্রচেষ্টাও চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। ইতোমধ্যেই চট্টগ্রামে পুলিশের ভাতে আটক হয়েছে দুশোর অধিক গাড়ি।

নগরীর আন্দরকিল্লায় বসবাস করেন কুমিল্লার বাসিন্দা ওবায়দুল গণি বলেন, ‘বাড়িতে না গেলে ঈদ মাটি হয়ে যাবে। করোনাকে সঙ্গী করেই এখন বেঁচে থাকতে হবে। করোনা এখন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। পাচ-ছয়মাস পর বাড়িতে যাচ্ছি। বাড়িতে না গিয়ে কতদিন থাকা যায় ?’

ঘরমুখো আরেক ব্যক্তি সালাউদ্দীন শেখ বলেন, ‘কিছু করার নেই, বাড়িতে তো যেতেই হবে। বাড়িতে না গিয়ে তো আর এখানে পড়ে থাকা যাবেনা। ঈদের মৌসুমে সবার সাথে একত্র হওয়ার আনন্দটাই নষ্ট হয়ে যাবে এভাবে। আমি আমার জায়গা থেকে মাস্ক পরলে বাড়ির যাত্রায় আমি নিরাপদ থাকবো।’

সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় দূরপাল্লার গাড়িগুলো রাস্তায় নামতে পারছেনা তাই পেশাজনিত কারনে চট্টগ্রামে বসবাস করা ভিন্ন জেলার মানুষেরা ভেঙ্গে ভেঙ্গে পাড়ি দিচ্ছেন বাড়ির পথ। শপিংমলে ঝুঁকি নিয়ে শপিংযের পর এবার ঝুঁকি চলছে বাড়ির পথে জনসাধারণের ঈদযাত্রা। এরফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তো বাড়ছে, পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে বিরাট কোনো শঙ্কা।

ইনি/চখ

এই বিভাগের আরও খবর