chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

প্রথমবার গভীর সমুদ্র থেকে পাইপলাইনে তেল খালাস শুরু

গভীর সমুদ্রে জাহাজ থেকে সরাসরি পাইপলাইন দিয়ে পরীক্ষামূলক জ্বালানি তেল খালাসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে জ্বালানি খাতে নতুন দিগন্ত শুরু করল বাংলাদেশ।

রোববার (০২ জুলাই) বিকেলে মহেশখালীতে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) এর সঙ্গে সৌদি আরব থেকে আসা এমটি হোরাই জাহাজের সংযোগ ঘটানো হয়।

ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, ‌‘আমরা সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) এর সঙ্গে সৌদি আরব থেকে ৮২০০০ টন অপরিশোধিত তেল নিয়ে আসা এমটি হোরাই জাহাজের সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটবে এবং জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে।’

বিকাল ৪টার দিকে সংযোগ স্থাপন করলেও তেল খালাস কার্যক্রম পুরোদমে চালু করা হয় রোববার রাত আনুমানিক ৯টায়।’

ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল ও ফিনিশড প্রডাক্ট স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে এবং নিরাপদে খালাস করার জন্য ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এসপিএমের সঙ্গে দুটি পাইপলাইনের সাহায্যে উপকূলের রিজার্ভারের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে, যার একটি দিয়ে ক্রুড অয়েল ও অন্যটি দিয়ে ডিজেল খালাস করা হবে। একইভাবে উপকূলে ক্রুড অয়েল ও ডিজেলের জন্য দুটি আলাদা ট্যাংকার নির্মাণ করা হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে অবস্থান করা জাহাজ থেকে জ্বালানি খালাসের এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, স্মার্ট টেকনোলজির মাধ্যমে গভীর সমুদ্র থেকে জ্বালানি তেল ভূমিতে সরবরাহ শুরু করা হবে।

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এটি একটি নতুন পদক্ষেপ। এর ফলে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা পাবে।

জানা গেছে, এসপিএম থেকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসংলগ্ন এলাকায় নির্মিত ট্যাংকে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল সংরক্ষণ করা হবে। ট্যাংক এলাকা থেকে গভীর সমুদ্র পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দূরে এসপিএম বয়া স্থাপন করা হয়েছে। ক্রুড অয়েলের ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৩০ হাজার টন এবং ডিজেল ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ৮০ হাজার টন। কিছুদিনের মধ্যে ডিজেলবাহী জাহাজও আসবে।

উপকূলীয় দুটি ট্যাংক থেকে দুটি পাইপের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারী পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। মাতারবাড়ী থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত স্থাপিত পাইপলাইন সমুদ্র তীরবর্তী ও সমতল এলাকায় মাটির নিচে দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চীনের চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন কোম্পানি পাইপলাইনের কাজ সম্পন্ন করে। এর উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান ছিল জার্মানির আইএলএফ নামক প্রতিষ্ঠান। চায়নার এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।

 

 

তাসু/চখ

এই বিভাগের আরও খবর