চমেক হাসপাতালে সিটি স্ক্যান সেবা বন্ধ ১৩ দিন
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এমআরই, ব্র্যাকি থেরাপি, ক্যাথল্যাবসহ ডজন খানেক মেশিন অচল। এবার যোগ হলো সিটি স্ক্যান । ১৩ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সিটি স্ক্যান পরীক্ষা। এর ফলে গরিব রোগীদের প্রতিদিন হাসপাতালের বাইরের রোগ নির্ণয়কেন্দ্র থেকে সিটি স্ক্যান করাতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বেশি টাকা ব্যয় এবং দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের রেডিওলোজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ চন্দ্র মজুমদার। তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, গত ৬ জুন মেশিনটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে অচল হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতালে দুটো সিটি স্ক্যান। তারমধ্য একটি দীর্ঘ বছর ধরে অচল। যেটি সচল ছিলো তাও আর নেই। সব রোগীদের বাইরে পরীক্ষা করতে হচ্ছে। বাড়তি টাকা যাচ্ছে। গরীব রোগীরা চিকিৎসা সেবা পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। মেশিনটি সচল করতে কাজ চলমান রয়েছে। তাও আরও কয়েকদিন লাগবে।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সাল থেকে চমেক হাসপাতালে সিটি স্ক্যান পরীক্ষা সেবা শুরু হয়। এভাবে টানা ২০১৪ সাল পর্যন্ত সেবা অব্যাহত থাকে। তবে ওই বছরই আগস্ট মাসে পুরোনো সিটি স্ক্যানটি অকেজো হয়ে পড়ে। এরপর ৪ বছর সিটি স্ক্যান বন্ধ থাকে হাসপাতালে। পরে ২০১৮ সালে নতুন একটি সিটি স্ক্যান বরাদ্ধ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আরও এক বছর পর ১৯ সালের দিকে নতুন মেশিনের সেবা চালু হয়। এভাবে চলছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। মাঝে কয়েকবার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার এসে ঠিক করে দেয়। সর্বশেষ চলতি মাসের ৬ জুন মেশিনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
সিটি স্ক্যান সচল থাকতে প্রতিদিন ৫০ জনের পরীক্ষা করানো যেত। সকাল ৮ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলত এই সেবা।পরীক্ষা ভেদে সিটি স্ক্যান বাবদ চমেক হাসপাতালে ফি ২ হাজার ও ৪ হাজার টাকা। কিন্তু চমেক হাসপাতালের ২ হাজার টাকার এ ফি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৩ হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। আর হাসপাতালের চার হাজার টাকার এ ফি বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা চলে যাচ্ছে রোগীদের।
জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত রিনা বেগম চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে যান। চিকিৎসক তাকে ৩ টি পরীক্ষা দেয়। তারমধ্য সিটি স্ক্যান, আরও একটি পরীক্ষা এভারকেয়ারে করতে পরামর্শ দেন। ব্র্যাকি-থেরাপি ঢাকা গিয়ে করতে পরামর্শ দেন। কারণ এটি চট্টগ্রামে আরও কোথাও নেই। আগে চমেক হাসপাতালে করা হতো। মেশিনটি অচল প্রায় ১ বছর। তাই সেবাও বন্ধ রয়েছে। তিনি মুঠোফোনে চট্টলার খবরকে বলেন, চিকিৎসক দেখানো ছাড়া আরও কোন সেবা পাওয়া যায় না হাসপাতালে। ওষুধ, পরীক্ষা সব বাইরে থেকে করতে হয়। আমাদের গরীব রোগীদের দেখবার যেন কেউ নেই।
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, রেডিওলজি বিভাগ থেকে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ার তথ্য পেয়েই আমরা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করেছি, চিঠিও দিয়েছি। প্রতিষ্ঠানটি লোক জন এসে কাজ করছেন। আগামী ২২ তারিখের মধ্যে ঠিক হবে। তারপর সেবা শুরু হবে।
নচ/মআ/চখ