chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

গ্রাম মেতেছে ঈদ আনন্দে ফাঁকা চট্টগ্রামনগরী, প্রাণবন্ত আমেজ

‘চিরচেনা সবুজের প্রতিটা বাঁকে, প্রিয়তমা প্রিয়জন সারাক্ষণ ডাকে’-প্রিয়তমা আর প্রিয়জনের ডাকে শহরের কর্মব্যস্ত যান্ত্রিক মানুষরা ঈদের ছুটিতে ছুটে এসেছেন গ্রামে। মমতাময়ী মা,স্নেহময়ী বাবা,আদরের ভাই-বোন আর ছোট বেলার খেলার সঙ্গীদের প্রিয় সান্নিধ্যে।

প্রিয়জনদের কাছে পেয়ে তাই বাঁধভাঙ্গা ঈদ আনন্দে মেতেছে গ্রাম। নিখাদ এ আনন্দের ঝলকানিতে রাতের আঁধারেও ফুটেছে রঙ্গিন আলো। জেগে উঠেছে গ্রাম। গ্রামীণ জনপদে লেগেছে আনন্দের ছোঁয়া। স্বজনদের সম্মিলন হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের প্রতিটি গ্রাম। ঈদের ছুটিতে গ্রামে শহরবাসী কারো কারো স্বল্পকালীন উপস্থিতি সংশ্লিষ্ট জীবনধারায় এনে দিয়েছে দ্যোতনা। শৈশবের স্মৃতিঋদ্ধ জনপদ স্বল্প সময়ের জন্য এনে দিয়েছে ভিন্ন আমেজ। ভিন্ন চিত্র ছিল চট্টগ্রাম মহানগরীতেও। খোলা ও ফাঁকা নগরীতে প্রাণ খুলে চলতে পেরেছে নগরবাসী। কোথাও কোন যানজট ও জনজট নেই। ছিল না লক্করঝক্কর গাড়ির বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। সর্বত্র ছিল মুক্ত হাওয়ার মুক্ত প্রাণের প্রতিধ্বনি।
আজ সোমবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ঈদের ছুটি শেষে অফিস,আদালত খোলা। তারপরও শুণশান নিরবতা নগর জুড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও বন্দরসহ পুরো নগরীর সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত হয়ে উঠতে আরো কয়েকদিন লাগতে পারে। ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার,বান্দরবান,রাঙ্গামাটি এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। চারদিকে সাজসাজ রব ও উৎসবের আমেজ।

প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার নানা অনৈক্যের বাতাবরণ ঝেড়ে ফেলে ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের গ্রামগুলো আনন্দে ছিল উদ্বেল। উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে গ্রামগুলো। স্বজনদের পাশাপাশি স্কুল কলেজের সহপাঠী ও গ্রামের বন্ধু-বান্ধবরা বহুদিন পর একসঙ্গে হয়ে মেলে ধরেছে স্মৃতির ডালা । ইট-পাথরের গড়া নগরজীবনের নানা ভোগান্তি আর বুকে চাপা সুখ-দু:খ ভাগাভাগি করে নিয়েছে একে অপরের সঙ্গে। এ প্রান্তিই আমাদের ঈদ আনন্দকে বর্ণিল করে তোলে।

এদিকে নগরীর অনেকের দু:খ এ মুক্ত পরিবেশের স্থায়ীত্ব না হওয়া নিয়ে। নগরে বেড়াতে আসা পটিয়ার ফাইমা জাহান বললেন, এমন স্বাচ্ছন্দ্যময় নগরী কার না ভাল লাগে? কিন্তু এই নগরী তো আমাদের চেনা জানা পথ নয়। এই চিত্র তো অস্থায়ী। আর ক’দিন পরই তো কোলাহল বেড়ে যাবে নগরীতে। উবে যাবে নগরীর এই মুক্ত হাওয়ার মুক্ত প্রাণ। তবে প্রাণবন্ত আমেজের এই নগরীতে ভোগান্তি, দুর্ভোগ ও কষ্টের কমতি ছিল না। ফাঁকা নগরীতে বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা ঈদের দোহাই দিয়ে যেভাবে পারছে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। যাত্রীরাও এক প্রকার বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিচ্ছেন।
আর্থিক ধণ্যদশার কারণেও অনেকে বাড়িতে না গিয়ে চট্টগ্রাম নগরে থেকে গেছেন বলে জানালেন একটি বেসরকারি অফিসের পিয়ন জাহাঙ্গির আলম।
ঈদের একটানা ছুটির আমেজে চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এখনো উপচে পড়া ভিড়। টানা ছুটির ফলে ফাঁকা নগরীতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো নির্মল আড্ডার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। শিশুপার্কগুলো শিশু-বুড়ো তরুন-তরুণীদের ভিড়ে একাকার হয়ে গেছে। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে বিনোদন কেন্দ্রগুলো ফিরে পেয়েছে প্রাণ।

এই বিভাগের আরও খবর