chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

দ্রব্যমূল্যের চড়া দামে ফানুস বানাতে বেগ পেতে হচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক: অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে পালিত হবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। অনেকে আশ্বিনী পূর্ণিমাও বলে থাকেন। পবিত্র এ দিনটিতে গৌতম বুদ্ধের কেশ ধাতুর প্রতি পূজা ও সম্মান প্রর্দশনের জন্য ফানুস উড়ানো হয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন্দিরগুলোতে  ফানুস বানানোর ধুম পড়েছে।

গত শুক্রবার চট্টগ্রাম নন্দনকান বৌদ্ধ বিহারেও ফানুস বানাতে ব্যস্ত দেখা যায় তরুণদের। কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ফানুস বানানোর সব উপদান দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন তারা।

সাধারণত ফানুস বানাতে দরকার কাগজ , গাম, বাঁশ , কাপড়, মোম, বতিসহ নানা উপাদান। এসব উপাদানগুলোর মধ্যে আবার কোনটার দাম বেড়েছে ৫০ টাকা, কোনটার দাম বেড়েছে ২ শ টাকা থেকে ৩ শ টাকা। ফানুস বানানোর সবচেয়ে দরকারী উপাদান হলো কাগজ।

রবিবার (২৮ আগস্ট) আন্দরকিল্লা বাজার ঘুরে দেখা যায়,  সিংগেল লেয়ারের কাগজের বর্তমান মূল্য ৭০০ টাকা, ডাবল লেয়ারের মূল্য ১৪ শ টাকা। যেটা দুয়েক সপ্তাহ আগে এর মূল্য ছিলো যথাভাবে ৫৫০ টাকা এবং ১১ শ টাকা। এর আগের বছর কাগজটির মূল্য ছিলো ৪০০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত। ফেবিকল গামের লিটার প্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা। একই সাথে প্রতি প্যাকেট মোম বাতির দাম বেড়েছে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাগজ বিক্রেতা জানান, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মালামাল পরিবহনে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে আমাদের। সেই সাথে কারখানায় চাহিদা মাফিক কাগজ উৎপাদন না হওয়ায় এ বছর কাগজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনে আরও বৃদ্ধি পাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে দেওয়ানহাটের বাঁশ বিক্রির দোকানেও দাম বাড়ার একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।ফানুস বানানোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বাঁশ । তবে যেকোনো বাঁশ  দিয়ে বানানো যায় না। ফানুস বানাতে দরকার হয়  মুলি বাঁশ। বড় মুলি বাঁশের বর্তমান মূল্য ১৭০ টাকা, ছোট ৯০ টাকা। যা গত বছর ছিলো ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। পরিবহনে বাড়তি টাকা গুনতে হওয়ায় এ বছর বাঁশের দাম বৃদ্ধি বলে জানান বিক্রেতারা।

দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তরুণ বৌদ্ধ সংগঠনগুলো। অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের সভাপতি প্রত্যয় বড়ুয়া জানান, আমাদের  সংগঠনের দুয়েক জন বাদে সবাই শিক্ষার্থী। সংগঠনের সদস্যদের থেকে কিঞ্চিত চাঁদা তুলে আমরা প্রতি বছর ফানুস উত্তোলনের আয়োজন করি। কিন্ত সব জিনিসের দাম বাড়ায় আমাদের চাঁদার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।  শিক্ষার্থী হওয়ায় অনেকের চাঁদা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই দামটা সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি কামনা করছি।

নন্দন সংগঠনের সভাপতি অতনু বড়ুয়া বলেন, এবার কাগজ, গাম, বাঁশ সব উপাদান চড়া মূল্য কিনতে হচ্ছে আমাদের। পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চাঁদা ছাড়া আর অন্য কোন অর্থ নেই। আমাদের সামান্য অর্থে প্রতি বছর শ খানেক ফানুস উত্তোলন হয় সংগঠন থেকে কিন্ত এবার জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আমরা ৪০টা টার্গেট দিয়েছি। আমাদের এ সামান্য চেষ্টায় বৌদ্ধ সিনিয়র সংগঠনের সহোযোগিতা কামনা করছি।

চট্টলার খবর/মুক্তা

এই বিভাগের আরও খবর