chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

হিট স্ট্রোক এড়াতে ঘরোয়া পানীয়

প্রচণ্ড গরমে চারদিক তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই উচ্চ তাপমাত্রায় হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে শরীর একবারেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে।

রোদে যারা দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করেন তাদের যেমন হিট স্ট্রোক হতে পারে, আবার বয়স্ক, শিশু এমনকি পশু-পাখিদেরও ক্ষেত্রেও এমনটি হতে পারে। এছাড়া শরীরে পানিশূন্যতা ও বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিার কারণেও হিট স্ট্রোক হতে পারে।

প্রথমে হিট ক্র্যাম্প হতে পারে। এর ফলে মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে ও সব সময় পিপাসা পায়। পরবর্তী সময়ে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব, অসংলগ্ন আচরণ ইত্যাদি দেখা দেয়। এছাড়া শরীরের তাপ বেড়ে যায় ও প্রচুর ঘাম হয়।

হিট স্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায়। এমনকি নিঃশ্বাস দ্রুত হয় ও নাড়ির স্পন্দন কমে আসে বা দ্রুত হয়।

রক্তচাপ কমে যায়। খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্ন ইত্যাদি। এমনকি রোগী অজ্ঞান হয়েও যেতে পারে।

আর এ ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায়েই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকে এড়ানো সম্ভব। এজন্য পুষ্টিকর কিছু খাবারের পাশাপাশি বিশেষ করে কিছু পানীয় আছে, যেগুলো পান করলে গরমে শরীর ঠান্ডা থাকবে ও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে।

বেদানা-ওটস ড্রিংক

বেদানা, ওটস, দুধ, চিয়া সিডস, পাকা পেঁপে আর আপেল একসঙ্গে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। সম্ভব হলে দু একটা আখরোটও দিতে পারেন। এই পানীয় আপনার শরীরকে রক্ষা করবে রোদের হাত থেকে। এছাড়াও এই একগ্লাস পপানীয়ের মঘ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের জন্য ভাল। এক্ষেত্রে সব সময় ফ্রিজের ঠান্ডা দুধ ব্যবহার করবেন।

আম পান্না ড্রিংক

গরমে আম পাওয়া যায়। শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য কাঁচা আম অনেক উপকারী। এ জন্য প্রথমে কাঁচা আম সিদ্ধ করে নিন। তাতে এবার পরিমাণমত লবণ, পানি, চিনি ও মসলা দিয়ে জাল করলেই হয়ে যাবে আম পান্না। চাইলে কয়েকটি পুদিনা পাতার কুঁচিও মেশাতে পারেন।

গাজর বিনস ড্রিংক

ছোট ছোট টুকরো করে গাজর, বিনস, কড়াইশুঁটি, টমেটো, মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করার সময় নুন, গোটা গোলমরিচ সামান্য হলুদ, স্লাইস করে কাটা আদা-রসুন ছাড়া আর কিছুই দেবেন না। এবার এই স্যুপ গরম গরম খতে পারেন না চাইলে তা একটু ঠান্ডা করে ব্লেন্ডারে পিষে নিয়েও খেতে পারেন। তবে চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারলে কিন্তু সবথেকে ভাল।

ছাতুর ড্রিংক

শরীর ঠান্ডা রাখার উপকরণ তো এতে রয়েছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন পুষ্টিগুণও রয়েছে। ঠান্ডা পানিতে লবণ, ছাতু, লেবুর রস, জিরার গুঁড়া, বিট লবণ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ মরিচ ও পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেয়ে থাকেন এটি।

আইসড জলজিরা

প্রথমে ঠান্ডা পানিতে তেঁতুলের পেস্ট, পুদিনা পাতার কুচি, জিরার গুঁড়া, গুড়, বিট লবণ, আদার গুঁড়া, লেবুর রস, অল্প পরিমাণে মরিচ গুঁড়া ও মসলা মিশিয়ে তৈরি করুন জলজিরা। এটি স্বাদে খুবই ভালো এবং শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে।

পুদিনা-লেবুর ড্রিংক

পুদিনা পাতার সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে সহজেই তৈরি করা যায় এই উপকরণটি। সঙ্গে বিট লবণ, গোল মরিচ এবং চিনিও মেশানো যেতে পারে। চাইলে কয়েক টুকরো বরফও দিতে পারেন।

তেঁতুল ড্রিংক

তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় খনিজ, ইলেকট্রোলাইটস এবং ভিটামিন, যা শরীরের তাপমাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অল্প পরিমাণ তেঁতুল পানি ১০ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন।

বাটার মিল্ক ড্রিংক

বাটার মিল্ক প্রোবায়োটিকের একটি ভালো উৎস। গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে প্রয়োজনীয় যে ভিটামিন এবং খনিজ শরীর থেকে দূর হয়ে যায়, তা পূরণে সাহায্য করতে পারে বাটার মিল্ক।

ডাবের পানি

গরম থেকে বাঁচতে ডাবের পানির কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। এই গরমে প্রতিদিন একটি ডাব খেতে পারেন।

অ্যালোভেরা ড্রিংক

গরম থেকে বাঁচতে এই প্রাকৃতিক উপাদান দারুণ সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালোভেরা জুস পান করলে শরীর গরম সহ্য করার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

দই-মসলার ড্রিংক

মসলা ছাঁচ এখন প্যাকেটেই পাওয়া যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এটি তাজা খাওয়ার স্বাদ অনেক বেশি। এর জন্য টক দইয়ে ও অল্প পানিতে ধনে পাতা কুঁচি, কাঁচা মরিচ কুঁচি, পরিমাণমত লবণ ও চাট মসলা মেশালেই হয়ে যায় মজাদার ছাঁচ। যা শরীর ঠান্ডা রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কলা-কিউই ড্রিংক

এককাপ কলা, কিউই, আনারস, আপেল, আমন্ড বাটার, খেজুর, চিয়া সিডস আর টকদই দিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার তা ছেঁকে নিয়ে খান। এই ড্রিংকে শরীর ঠান্ডা থাকবে।

মআ/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর