chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

তহবিলের খবরে শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলো ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে- এ সংবাদে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) লেনদেনের শুরুতে দেশের শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শুরুতেই লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে ডিএসই প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৮৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯টির।

শেয়ারবাজারে স্টেকহোল্ডারদের একটি অংশের দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে । নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো, যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। আর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে।

তারল্য সংকট ও আস্থাহীনতার কারণে ধারাবাহিক দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। বাজারে টানা দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল চায়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামত জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক সাড়া দেয়। অর্থ মন্ত্রণালয় শেয়ারবাজারে তারল্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়।

এরপর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশে বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালা বিষয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত যেকোনো তফসিলি ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।

তহবিল গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, আর্থিক খাতের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকসমূহের নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগের আইন রয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার ও মুদ্রা বাজারের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী হিসেবে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্রমাগত তারল্য প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউস) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসকে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশে বিশেষ ব্যবস্থায় এ তহবিল সরবরাহ করা হবে।

তফসিলি ব্যাংকগুলো চাইলে নিজস্ব উৎস থেকে তহবিল জোগান দিতে পারে। এছাড়া ধারণকৃত ট্রেজারি বিল বা বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে।

প্রথমে নিজ উৎস থেকে তহবিল গঠন করে পরবর্তীতে ট্রেজারি বিল বা বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ অর্থ নেয়া যাবে। এ তহবিল হতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ২৬ ক ধারায় বর্ণিত বিনিয়োগসীমা অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।

ব্যাংকসমূহের অতিরিক্ত তারল্য থেকে ট্রেজারি বন্ড বা বিলের মাধ্যমে এ সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। ট্রেজারি বন্ড বা বিলের রেপো মূল্যের ৫ শতাংশ মার্জিন হিসেবে রেখে তারল্য সুবিধা দেয়া হবে। নগদ রেপোর অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখে সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজের বাজার মূল্য আদায়যোগ্য অর্থ অপেক্ষা কম হলে তা ইতিপূর্বে গৃহীত মার্জিন থেকে সমন্বয় করা হবে। সমন্বয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হলে ব্যাংক তা দিতে বাধ্য থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৯০ দিন মেয়াদী রেপো প্রদান করা হবে। রেপোতে বর্ণিত সময়সীমা ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পুনঃনবায়নের সুবিধা থাকবে। তবে, এক্ষেত্রে তহবিল ব্যবহারের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচ্য হবে।

তারল্য সুবিধা পেতে ব্যাংকসমূহকে যেসব শর্ত পরিপালন করতে হবে
এ তারল্য সুবিধা পেতে অর্থের কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের মহাব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ রেপো নবায়নের প্রয়োজন হলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের একই বিভাগে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের সময় সম্পাদিত বিনিয়োগের প্রমাণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাবের বিবরণ দাখিল করতে হবে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইন এবং সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর