chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে ব্যবসায়ীরা দেউলিয়ার পথে

নিজস্ব প্রতিনিধি:পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি করে একটি অসাধু সিন্ডিকেট সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সম্মিলীত ঠিকাদার ফোরামের নেতারা। জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দামের মধ্যে দিয়ে প্রকল্পের কাজ চলমান রাখতে গিয়ে অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে গেছে বলে জানান নেতারা।

বুধবার (২৩ শে মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম সম্মিলিত ঠিকাদার ফোরামের নেতারা এসব কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঠিকাদার ফোরামের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান টিটু। এসময় তিনি বলেন, নয় মাসের ব্যবধানে নির্মাণ সামগ্রীর দাম ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ, গৃহয়ান ও গণপূর্ত বিভাগ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি করপোরেশন, রেলওয়ে, জনস্বাস্থ্য এইচইডিসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামে প্রায় তিন হাজার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসব প্রকল্পের কাজ করে যাচ্ছেন। রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে অধিকাংশ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখন বন্ধ হবার পথে।

তিনি অভিযোগ করেন, গেল দুই মাসে হঠাৎ করে নির্মাণ সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে ইলেকট্রনিকস, হার্ডওয়্যার সেনিটারী পণ্যের দামও। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে নির্মাণ শ্রমিকের দৈনিক মজুরি বেড়েছে। বর্তমানে একজন নির্মাণ শ্রমিকের মজুরি ৮০০ টাকা। এছাড়া টন প্রতি ৫০ হাজার টাকার রড এখন ৯১ হাজার টাকা। আমদানি করা ৩৪ হাজার টাকার পাথরের টন এখন ৫১ হাজার টাকা। এভাবে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু সরকারী কোনো বিভাগের রেট রিসিডিউল করা হয়নি। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাড়তি দামে নির্মান সামগ্রী ক্রয় করে চলমান কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে অনেক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। একটি অসাধু সিন্ডিকেট এই দাম বৃদ্ধি করে সরকারের ভাবমূতি ক্ষুণ্ন করছে। অনেকে দেউলিয়ার পথে।

আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, আগে নির্মাণ কাজে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ওয়েল কোম্পানির উৎপাদিত বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বিদেশ থেকে বিটুমিন আমদানিকারকদের কারসাজিতে দেশিয় বিটুমিনের সরবরাহ চাহিদার বিপরীতে কমে গেছে। ফলে বাজারে সংকট দেখিয়ে প্রতি ড্রাম বিটুমিন বিক্রি করা হচ্ছে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায়। এতে নির্মাণ খরচ  ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু কাজের রেইট পরিবর্তন করা হয়নি।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে এলজিইডি ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন সুফল, আলী হোসেন, জসিম উদ্দিন, মহসিন হায়দার, নজরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন লিটন, সাইফুল ইসলাম, শওকত হোসেন, মো. ইলিয়াছ চৌধুরি, নুরুল আবচার, আবদুল্লাহ টিটু, জামশেদ চৌধুরি, মোহাম্মদ রায়হান, মোহাম্মদ ইমরান, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন  প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার।

একই সঙ্গেসরকারি প্রকল্পের ‘রেইট রিসিডিউল’ করার দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুল হকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সম্মিলিত ঠিকাদার ফোরাম।

আরকে/নচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর