chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

পাঠাও চালিয়ে বিকাশ এজেন্টদের টাকা ছিনতাই করেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঠাও এ্যাপস চালিয়ে নগরের অলি-গলিতে মোটরবাইকে যাত্রী সেবা দেয়ার নামে করে থাকেন ছিনতাই। ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হলে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এভাবেই নগরে ঘুরে ঘুরে বিকাশ,নগদ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের টার্গেট করে ছিনতাই করে  আসছিল ডিপজল ও তার বাহিনী।

অবশেষে নগরের ৫ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১৯ মামলার আসামি ডিপজল ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় ইপিজেড থানার আকমল আলী রাস্তার খালপাড়ের জাহাঙ্গীরের বিল্ডিং হতে ছিনতাইকারী সাত্তার শাহ ডিপজল (৪১), রাজু দেবনাথ (৩৬) ও তার স্ত্রী রোজিনা বেগম’কে (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের তথ্যমতে একই এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় পাঠাও চালক রুবেলকে (৩৩)।

ডিপজলের গ্রামের বাড়ি রাউজানের কদলপুর ফরিদসাহেবের বাড়ী এলাকায়। সে ইপিজেড থানার কাজীর গলির জাহাঙ্গীরের বিল্ডিং-এ ভাড়া থাকতেন। রাজু পটিয়ার জিরি ইউপি সুনীল সওদাগরের বাড়ীর রতন দেবনাথের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আসামী রুবেল এবং মাহফুজ পেশায় বাইক চালক। তারা পাঠাও এ্যাপস এর মাধ্যমে ভাড়ায় বাইক চালনা করতো । আসামী রুবেল আকমল আলী রোড পকেট গেইট এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো। বাইক চালানোর পাশাপাশি সে নগদ টাকার বাহক’কে খুজে বেড়াতো।

এভাবে করে একসময় ভিকটিম বিকাশের ডিএসও আসলামকে টার্গেট করে। আসলাম পতেঙ্গার মাইজপাড়া, কইল্যার হাট, গার্ডরুম, কন্ট্রোলের মোড়, আলীর দোকান রাজা পুকুর পাড় এলাকায় বিকাশের ই-লোড দিয়ে নগদ টাকা সংগ্রহ করেন। তার  দৈনিক কালেকশন ৩ লক্ষ টাকারও বেশী।

বিষয়টি সে সহযোগী বাইক চালক মাহফুজকে জানালে মাহফুজ রাজু দেবনাথকে জানায় এবং রাজু দেবনাথ ছিনতাইকারী সাত্তার শাহ ডিপজলকে জানায়। পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী লাল রঙের একটি পালসার মোটর সাইকেলে সাত্তার শাহ ডিপজল, রাজু দেবনাথ এবং মাহফুজ মাইজপাড়া কন্ট্রোলের মোড় এলাকায় অবস্থান নেয়। বাইকটির চালক ছিল আসামী মাহফুজ।

অন্য আসামী রুবেল আরেকটি মোটর সাইকেল নিয়ে কিছুটা দূরে অবস্থান করে। ভিকটিম সর্বশেষ বিকাশ এজেন্টের সাথে লেনদেন শেষে ঘটনাস্থলের দিকে পায়ে হেটে রওয়ানা করেন। এসময় মোটর সাইকেল নিয়ে উক্ত তিন জন তার গতিরোধ করে ব্যাগ টানাটানি করে টাকা কেড়ে নিতে চাই। ব্যাগ নিতে না পেরে তাকে ধারালো ছোরা দ্বারা আঘাত করে গুরুতর জখম করে উল্লেখিত আসামীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় ডিভটিম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এই ঘটনায় বিকাশের পতেঙ্গা জোনের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস সুপারভাইজার মো. কামরুল হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন।

এরই প্রেক্ষিতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িত ১৯ মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ সময় ডিপজলের কাছ থেকে একটি এলজি, এক রাউন্ড কার্তুজ এবং ৫টি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া  তার বাসা থেকে ৫০০ পিছ ইয়াবাও উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ইপিজেড থানায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হোসেন কবির বলেন, নগরের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই করতো সাত্তার শাহ ডিপজল। আমরা নগরের ৫ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডিপজলসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি এলজি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা  হয়েছে।

জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর