chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চিকিৎসা বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসা বর্জ্য বিধিসম্মতভাবে ব্যবস্থাপনা না করায় ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় হযরত শাহজালাল এন্টারপ্রাইজকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী বলেন, গতকাল মঙ্গলবার এ জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ ও ‘হযরত শাহজালাল এন্টারপ্রাইজ’ তাদের অপরাধ স্বীকার করে। জরিমানার টাকা তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া এক মাসের মধ্যে চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম সেবা সংস্থাকে। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুন পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক, সিনিয়র কেমিস্ট জান্নাতুল ফেরদৌস ও পরিদর্শক মো. শাওন শওকত চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ নামক চিকিৎসা-বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকারী প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেন উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, বর্জ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে অপসারণ পর্যন্ত কোনো পর্যায়েই চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধিবিধান অনুসরণ করা হচ্ছে না। সাধারণ বর্জ্য ও চিকিৎসা বর্জ্য পৃথক ভাবে পরিবহনের কথা থাকলেও মিশ্রিত অবস্থায় তা পরিবহন করতে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানটিকে। ফলে সাধারণ বর্জ্যও পরিণত হচ্ছে সংক্রামক বর্জ্যে।

তিনি আরও বলেন, সিরিঞ্জের সুই, কাঁচি ইত্যাদি ধারালো ও সংক্রামক বর্জ্য কাটা বা ধ্বংস করার জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো যন্ত্রপাতি নেই। এছাড়া বর্জ্য উচ্চ তাপমাত্রায় ইনসিনারেট করার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোনো ইনসিনারেটর। এছাড়া স্যালাইনের নল, বোতল ইত্যাদি একটি পাকা চৌবাচ্চায় ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয় বলে প্রতিষ্ঠানের মালিকরা দাবি করে। কিন্তু পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানটিতে ব্লিচিং পাউডারের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

শাহাজালাল এন্টারপ্রাইজ পরিদর্শন শেষে মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, সংক্রামক বর্জ্যগুলো কোনোরকম জীবাণুমুক্ত ও পরিশোধন ছাড়াই কেটে টুকরো করে বিভিন্ন রিসাইক্লিংকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করছে। প্রতিষ্ঠান দুটির এমন কর্মকাণ্ডের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতিসাধন করেছে। তাই তাদের জরিমানা করা হয়েছে।

চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী সংক্রামক কোনো বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা তাদের সংগৃহীত সংক্রামক বর্জ্যগুলো পরিবেশ অধিদফতরের কোনো অনুমতি ছাড়াই হযরত শাহজালাল এন্টারপ্রাইজকে হস্তান্তর করছে। আর হযরত শাহজালাল এন্টারপ্রাইজের পরিবেশের কোনো ছাড়পত্র নেই।

এছাড়া ইটিপি বিহীন প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়ে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকার মধুবন সুইটস ইন্ডাস্ট্রিজকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এসএএস/জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর