chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বিভাগীয় মামলা

চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সার আবু বকর সিদ্দিকের মোবাইল ফোন থেকে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় এবার পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নিদর্শে দিয়েছে ও ডিবি পুলিশ পরিদর্শক রুহুল আমিনকে ব্যাখা তলব ও ছয় সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সিএমপি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পিআর) স্পিনা রানী এ তথ্য জানান।

সিএমপি কমিশনার (অ্যাডিশনাল আইজিপি) কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিবি টিমের হেফাজতে থাকার সময় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েন সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, ডিবির পরিদর্শক রুহুল আমিন, উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন, এএসআই বাবুল মিয়া, শাহ পরান জান্নাত ও মো. মাইনুল হোসেন এবং কনস্টেবল মো. জাহেদ ও আব্দুর রহমান। রুহুল আমিন এ ঘটনার নেপথ্যে কাজ করেছেন এবং এএসআই বাবুল মিয়া দুই সোর্সের মাধ্যমে বিট কয়েন সরিয়ে নিয়েছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। অভিযুক্তদের সবাইকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত রাখা হয়েছিল।

জানা গেছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে ফ্রিল্যান্সার আবু বকর সিদ্দিক ও ফয়জুল আমিন নামে আরও একজনকে গুলবাগ আবাসিক এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের একটি দল। পরদিন বিকেলে অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে সিএমপি অধ্যাদেশে একটি নন এফআইআর মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান করে ডিবি পুলিশ। আদালত তাদের ১০০ টাকা হারে জরিমানা করে মুক্তি দেন।

তবে আদালতে পাঠানোর আগ পর্যন্ত ডিবি পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে ফ্রিল্যান্সার আবু বক্কর গোয়েন্দা পুলিশের দলটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তিনি জানান, তার নিজের বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে ৪.৯৭৩৭ বিটকয়েন খোয়া গেছে। ডলারের হিসেবে এর পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশের হিসেবে প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

আবু বক্করের দাবি করেন, ছাড়া পেতে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার পরও ডিবি পুলিশের সদস্যরা তার বিট কয়েন হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু দেশে বিটকয়েন ব্যবহার অবৈধ হলেও আদালতকে এ বিষয়ে অবহিত করেনি গোয়েন্দা পুলিশ। মামলার আর্জিতেও বিট কয়েনের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। শুধু লেখা হয়েছে অনলাইন জুয়া খেলার অপরাধে আসামিদের গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিনের নেতৃত্বে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২ মার্চ আবু বকরকে পলাতক দেখিয়ে ও গোয়েন্দা পুলিশের দুই সোর্স মো. কাউসার আহম্মদ এবং শাহাদাত হোসেনকে আসামি করে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের অভিযোগে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা দায়ের করেন ডিবির এসআই মো. আলমগীর হোসেন। পরে সোর্স মো. কাউসারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

আবু বকরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে ৫ মার্চ আট পুলিশ সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন আবু বকরের স্ত্রী হুসনুম মামুরাত লুবাবা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।

 

মুন/চখ

এই বিভাগের আরও খবর