চট্টগ্রামে জয় বাংলা কনসার্টে ফোক মূর্ছনায় মঞ্চে লালন ব্যান্ড
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ স্মরণে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে চলছে জয় বাংলা কনসার্ট। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর তারুণ্যের প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলা আয়োজিত এই কনসার্টে ফোক গানের মূর্ছনা নিয়ে এবার মঞ্চে এসেছে জনপ্রিয় লালন ব্যান্ড।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বেলা তিনটায় এই কনসার্ট শুরু হয়। মঞ্চে এসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ২ টি গান একত্রে গায় লালন। ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’ এবং ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গান দুটি লালনের সঙ্গে সঙ্গে গায় মাঠে থাকা তরুণরা।
এরপরেই লালন ব্যান্ড দলের জনপ্রিয় গান- ‘পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না’ গানে মেতে ওঠে সকলে।
এবারের জয় বাংলা কনসার্ট মাতাচ্ছে সর্বমোট ৯টি দেশীয় ব্র্যান্ড দল। এগুলো হলো- অ্যাভোয়েড রাফা, নেমেসিস, চিরকুট, মেঘদল, লালন, তীরন্দাজ (চট্টগ্রামের ব্যান্ড দল), কার্নিভাল, আর্টসেল এবং ক্রিপটিক ফেইট।
সন্ধ্যায় ছোট এক বিরতি শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শেষে মঞ্চে আসে লালন ব্যান্ড। আধুনিক ছোঁয়ায় লালনের একেকটি জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন তারা। সঙ্গে তাল মেলায় বন্দর নগরীর দর্শক শ্রোতারাও।
এরপরে ৭টা ৪০ এর দিকে ক্রিপটিক ফেইট, রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে নেমেসিস, ৯টা ৩৫ মিনিটে চিরকুট আর সবশেষ রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে মঞ্চে উঠবে ব্যান্ড আর্টসেল। প্রতিটি ব্যান্ডই যথাক্রমে ৪৫ মিনিট করে পরিবেশনা করবে।
এর আগে, বেলা ৩টার দিকে শুরুতেই মঞ্চে ওঠে চট্টগ্রামের ব্যান্ড দল তীরন্দাজ। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে তারা জনপ্রিয় একেকটি গান পরিবেশন করতে থাকে। তাদের পরে বেলা ৩:৪০ মিনিটের দিকে মঞ্চে ওঠে ব্যান্ড কার্নিভাল। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তারা জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে। বেলা ৪টার দিকে মঞ্চে উঠে ৩০ মিনিট ধরে ভিন্ন ধারার সুরের গান পরিবেশন করে মেঘদল। তাদের একেকটি গানে কখনও উচ্ছ্বাস, কখনও বেদনার সাগরে ভাসেন দর্শক শ্রোতারা। বেলা ৫টা ২০ মিনিটে মঞ্চে আসে ব্যান্ড দল অ্যাভোয়েড রাফা।
আগে সাতবার ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই কনসার্ট আয়োজন হলেও এবারই প্রথম ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। বর্তমান প্রজন্মকে দেশের ঐতিহাসিক এই দিনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) তারুণ্যের প্ল্যাটফর্ম ইয়াং বাংলার নিয়মিত আয়োজন জয় বাংলা কনসার্ট।
ইয়াং বাংলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, রেজিস্ট্রেশনের আগে থেকেই তরুণেরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কনসার্টটির জন্য। রেজিস্ট্রেশন শুরুর পর আধা ঘণ্টা আগে দৈনিক রেজিস্ট্রেশনের কোটা শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কনসার্ট উপলক্ষে ইয়াং বাংলা ও সিআরআইয়ের পেজ থেকে শেয়ার করা বিভিন্ন ব্যান্ড দলের বক্তব্য, প্রোমো ও পোস্টার প্রকাশ করার পর থেকেই তা শেয়ার করে কনসার্টে উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন ভক্তরা।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিবারের মতো এবারও জয় বাংলা কনসার্টে নারীদের জন্য বিশেষ একটি প্রবেশপথের ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে যেন তরুণেরা কনসার্টটি নিরাপদভাবে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কনসার্টের আগের দিন বুধবার প্রস্তুত করা হয় স্টেজ। এরপর শিল্পীরা বিভিন্ন গানের সঙ্গে মূল কনসার্টের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ সময় গানের সঙ্গে সঙ্গে আলোর ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যায় স্টেডিয়ামে। সেই সঙ্গে গিটার ও ড্রামের শব্দে কেঁপে ওঠে স্টেডিয়াম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শত ভাষণের একটি। আর একাত্তরে মুক্তিকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।
মুন/চখ