chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

কর্ণফুলীতে ৩০০ বছরের আগের মনোহর আলী খানের জমিদার বাড়ির বিবর্ণ রূপ

বড় উঠান জমিদার বাড়িটি চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত।  এটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি যা চট্টগ্রামে মিয়া বাড়ি ও স্হানীয়দের কাছে দেয়াং পাহাড়ের জমিদার বাড়ি নামেও পরিচিত। তবে মূল জমিদার ছিলেন মনোহর আলী খান। জমিদার বাড়িটি সংরক্ষণের অভাবে বিপন্ন হয়ে উঠেছে। ঝোপ-জঙ্গলে গিলে ফেলেছে বাড়িটি।

চট্টগ্রাম শহরের কর্ণফুলী নদীর বা শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের মিয়ার হাট এলাকায় অবস্থিত ৩০০ বছরের পুরনো জমিদার মনোহর আলী খানের বাড়ি। এই গ্রামেই এক সময় বসবাস ছিল এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জমিদার রাজা শ্যাম রায়। পরবর্তীতে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে হন মনোহর আলী খান।

স্হানীয়রা জানান, মনোহর আলী খান ৩০০ বছর আগের জমিদার ১৬ তম প্রজম্ম। ১৬৯৪ থেকে ১৬৯৬ সালের মধ্যে তাদের পূর্বপুরুষ এখানে আসেন আবার কেউ কেউ বলেন রাজা শ্যাম রায় তাদের পূর্বপুরুষ।তারা মূলত শায়েস্তা খানের বংশধর। শায়েস্তা খান তার জমিদারির ২৫ শতাংশ দেওয়ান মনোহর আলী খানকে দান করেছিলেন। সেখান থেকেই তাদের জমিদারি শুরু।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বড় উঠান মিয়াবাড়িতে প্রবেশ করতেই দেখা যায় একটি বড় পুকুর। পুকুরটিতে দুটি ঘাট রয়েছে। একটি ঘাট নষ্ট হওয়ার পর স্থানীয়রা সংস্কার করেন। পুকুরের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে রয়েছে মসজিদ। মসজিদের পাশের ঘাটটি এখনও অক্ষত রয়েছে। মসজিদটির কারুকাজ চোখে পড়ার মতো। মসজিদের পাশেই কবরে শুয়ে আছেন জমিদারের বংশধররা।

মূল বাড়ির সামনে রয়েছে লম্বা মাটির কাচারি ঘর। তারপর বড় বারান্দা। বারান্দায় দেওয়া হয়েছে মাটির পিলার। কাচারির মাঝে রয়েছে মূলবাড়িতে যাওয়ার পথ। মূল বাড়িটি এখন ঝোপঝাড়ে প্রায় আড়াল হয়ে গেছে। বাড়িটির আশপাশে অনেক পুরানো লিচু, বেলসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছ রয়েছে। মাটির নির্মিত কাচারিটির বিভিন্ন অংশ ক্ষয়ে গেছে। প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া দ্বিতল ভবনটিতে উপর ও নিচে তিনটি করে মোট ছয়টি কক্ষ ছিল। বাড়ির ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত ইট চৌকোণাকার। ইট তৈরিতে ব্যবহার হয়েছিল দেয়াঙ পাহাড়ের মাটি। এর সঙ্গে চুন-সুড়কি মিশিয়ে স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়।

বড় উঠান ইউপি সদস্য সাজ্জাদ খান সুমন বলেন, এটি অনেক পুরানো জমিদারবাড়ি হিসেবে আমাদের এলাকার গর্ব। পুরানো ভবন এখন সংস্কারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে মসজিদ ও পুকুরের ঘাটসহ আশপাশের চলাচলের রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে।

চখ/ পরী

এই বিভাগের আরও খবর