chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

এক হাজার টাকার বাজার দুই দিনও যায় না !

ঘণ্টা খানেক হচ্ছে বাজারে এসেছি, দুইকেজি র্ফামের মুরগি আর এককেজি লইট্টা মাছ কিনেছি তাতেই ৫০০ টাকা শেষ। এখনো সবজি,ডিম কেনা, পেয়াঁজ, রসুন, ডাল, মসলা, চিনি, চা পাতা, বাচ্চার দুধ কেনা বাকী। হাজার টাকার বাজার করলে দুইদিনও যায় না। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।

এমন আক্ষেপের সূরে বলছিলেন চকবাজার কাচাঁবাজারে বাজার করতে আসা গৃহিণী নাসরিন আক্তার। সকাল সাড়ে নয়াটার দিকে কথা হয় তার সাথে। তিনি জানায় ,তার স্বামী একজন ব্যাংকার।তিন মেয়ে একছেলে আর শাশুড়ি নিয়ে থাকেন বাকলিয়া রসূলবাগ আবাসিক এলাকায়।স্বামীর আয়ে চলে তার ৭ জনের সংসার।সন্তানদের পড়াশুনার খরচ, বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।

চকবাজার কাঁচা বাজার ঘুরে তার কথার সাথে মিল পাওয়া যায়।কয়েকজন বিক্রেতা থেকে দাম জিজ্ঞেস করতেই আচ পাওয়া যায়। ডিমের দাম কিছুটা কমলেও  মাছ-সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী।দেখা যায় বাজারসদাই করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত সবাইকে।

কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, টমেটো ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, আলু ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বড় আকারের কালো বেগুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বরবটি ১০০ থেকে ১২০ কেজি, চিচিঙ্গা ৮০ থেকে ১০০ , ঝিঙ্গা ১০০ থেকে ১২০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। বড় ও মাঝারি তেলাপিয়া ২৬০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রুই-কাতলার ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি, লইট্টা ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৪০০ থেকে ৪৫০ কেজি, বড় চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকা, হাঁস জোড়া ১ হাজার থেকে ১৩০০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ডিমের দামে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। প্রতি ডজন ডিমের দাম বিশ টাকা কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ১৫০ টাকা, দেশি মুরগির ১৮০ টাকা এবং প্রতি ডজন  হাঁসের ডিম ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। মাঝারি মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। বিদেশি নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

চকবাজার কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার জানান, বন্যার কারণে দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে সবজি বাহী গাড়ী আসছে না।বিশেষ করে সাতকানিয়া, লোহাগড়া, দোহাজারি থেকে সবজি আসা বন্ধ।বাশঁখালী থেকে অল্প সবজি আসলেও দাম চড়া।

আরেক ব্যবসায়ী ফারুক বলেন, উত্তর বঙ্গের সবজি দিয়ে বাজার চলে।পাইকারি বাজার রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে কিনে আনতে হয়।পাইকারী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে দেয়।আমরা যে দরে কিনি অল্প লাভে বিক্রি করি।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন চট্টলার খবরকে বলেন, বিভিন্ন উজুহাতে ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাম বৃদ্ধি করে। মাঠে কৃষক আর বাজারে ভোক্তা উভয়েই ঠকছেন। বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় মধ্যস্বত্বভোগীরা অতি মুনাফা লুটছে।এভাবে চলতে থাকবে, দায়িত্বশীলদের দায়িত্ববোধ যতদিন জাগবে না।

চখ/এআর

এই বিভাগের আরও খবর