chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামের বাজারে অপরিপক্ব লিচু, স্বাদ কম, দাম বেশি

চট্টগ্রামের বাজারে মিলছে মধুমাসের ফল লিচু। পুরোপুরি পরিপক্ক হয়নি লিচু কিন্তু দখল করতে শুরু করেছে বাজার। সপ্তাহ দেড়েক ধরেই নগরীর বাজারে দেখা মিলছে লিচুর। অনেকে বেশি লাভের আশায় আগেভাগেই বাজারে নিয়ে আসছেন অপরিপক্ক এ লিচু। মৌসুমের ফল হিসেবে ক্রেতাদের কাছে এ লিচুর চাহিদা রয়েছে। সরবরাহ প্রচুর থাকলেও বৈশাখ মাসের শেষে ও জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে মৌসুমে নতুন হওয়ায় দাম একটু বেশি কিন্তু স্বাদ কম, আকারে মাঝারি, ভেতরের আঁটিও বড়। চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং পাবর্ত্য জেলা থেকে আসা লিচু বিক্রি হচ্ছে বাজারে। তবে দুই সপ্তাহের মধ্যে উত্তরবঙ্গের রসালো লিচুতে ভরে উঠবে বাজার।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) নগরীর বহদ্দারহাট,অক্সিজেন মোড়, আমিন জুট মিল, পাইকারি আড়ৎ স্টেশন রোডের ফলমণ্ডি ও ও অপরটি ফিরিঙ্গীবাজার এলাকায় সাতকানিয়া বাঁশখালী উপজেলা, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি থেকে ট্রাকে করে লিচু আসতে দেখা যায়। সেগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। লিচুর ৫০০-১০০০ পিসের ঝুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। অপরিপক্ব লিচুর পরিমাণ বেশি হওয়ায় কিনছেন না অনেক ক্রেতাই। অপেক্ষায় রয়েছেন পরিপক্ব পাকা লিচুর।

ফলের পাইকারি ব্যবসা কেন্দ্র ফলমন্ডির একাধিক লিচু ব্যবসায়ী জানান, এখন বাজারে যে লিচুগুলো পাওয়া যাচ্ছে এগুলোর বেশির ভাগই রাঙামাটি থেকে আসা।চকরিয়া, বাঁশখালি, সাতকানিয়া, খাগড়াছড়ি থেকে আরো কিছু লিচু আসছে । এ লিচুগুলো নগরীর বিভিন্ন স্থানে হকাররা বিক্রি করে। আবার বিভিন্ন দোকানের ফল ব্যবসায়ীরাও এখান থেকে নিয়ে যায়। নতুন ফল হিসেবে বাজারে এর বেশ চাহিদাও আছে।

লিচু অপরিপক্ক ও স্বাদ কম এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, এগুলো অপরিপক্ক নয়, বরং আগাম জাতের লিচু। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির লিচুর স্বাদ একটু কম হয়ে থাকে। এ লিচুর বিচিও বড় হয়ে থাকে। তাইতো রাজশাহী, দিনাজপুর জেলার লিচুর চেয়ে এর দামও কম। রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, চাপাইনবাবগঞ্জের লিচু বাজারে আসতে আরো ১৫ দিন লাগবে। এক টুকরিতে ৫০০ থেকে ১৫০০ পিস পর্যন্ত লিচু থাকে। এ লিচুগুলো ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। আবার যদি লিচুর সরবরাহ কম থাকে তখন দাম বাড়ে। এ বছর লিচুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বাড়বে। কারণ উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টি হয়নি। যে কারণে ফলন কম হয়েছে। এতেই বুঝা যাচ্ছে এবার রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, চাপাইনবাবগঞ্জের লিচুর দাম বেশি হবে।

খুচরা ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে লিচু আসছে। নতুন ফল পাইকারি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করছে, তাই খুচরায়ও দাম বেশি। কেউ কেউ কিনছেন, অনেকে কিনছেন না। প্রতি ১০০ পিস লিচু এখন ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি করছি।

কদমতলী মোড়ে ভ্যান থেকে লিচু কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, নতুন ফল তাই বাসায় মা ও স্ত্রীর জন্য কিনেছি। কিন্তু দাম অনেক বেশি। একটা খেয়ে দেখলাম স্বাদও কম। অনেকক্ষণ দরাদরি করে ১০০ পিস লিচু ২০০ টাকায় কিনি।

আরেক ক্রেতা সেলিম হোসেন বলেন, বাজারে লিচু উঠতে দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। এক থোকা লিচু কিনলাম ২৪০ টাকায়। আরও বেশি নেয়ার ইচ্ছে ছিল তবে একটি লিচু মুখে দিয়ে দেখলাম স্বাদ কম। স্বাদ কম হলেও সমস্যা নেই, ভিটামিন সি। আবার তুলনামূলক আঁটির আকার বড়। পরিবারের সবাই খাবে, খুশি হবে। এটি অপরিপক্ব কিনা তা আমার জানা নেই।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, ছোট ছোট পিক-আপে করে কয়েক দিন ধরে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, সাতকানিয়া, বাঁশখালি, চকরিয়া থেকে লিচু আসছে ফলমণ্ডিতে। মান ও পরিপক্বতা ভেদে ৫০০-১০০০ পিসের ঝুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ৫ লাখ লিচু আসছে চট্টগ্রামে। প্রতিবছর জব্বারের বলীখেলায় বাঁশখালির লিচু বাজারে উঠলেও এবার কিন্তু উঠেনি। কয়েক দিন ধরে ফলমণ্ডিতে ওই এলাকার লিচু আসছে। বাঁশখালীর লিচু বাজারে ৮-৯ দিন থাকবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চট্টগ্রামের বাজারে পাবনা ও দিনাজপুরের লিচু আসবে।

 

মুন/চখ

এই বিভাগের আরও খবর