chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

রোজার আগে চট্টগ্রামে ফলের বাজার ‘তেতো’

বিদেশি ফলের উত্তাপ লেগেছে দেশি ফলে

রোজা শুরু হওয়ার আগেই অস্বস্তিতে ফলের বাজারের ক্রেতারা। ইফতারের অন্যতম পদ রসালো ফলের দরেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এতে ফলপ্রেমী ভোক্তাদের কাছে যেন ‘তেতো’ হয়ে উঠছে রকমারি ফল।চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার ফলমণ্ডিতে আমদানি করা সব ধরনের ফলের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত।দাম বাড়ার পেছনে রোজার বাড়তি চাহিদার সাথে ডলারের উচ্চ মূল্য ও উচ্চ শুল্ক কর নেয়ার অজুহাত দিচ্ছেন ফল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় ফল কিনতে এসে বিপাকে পড়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।

সারা দিনের রোজা শেষে ইফতারে হালকা ফলমূল খেতে চান রোজাদাররা। তাই রমজানে ফলের চাহিদাও বাড়ে। এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে রোজার আগে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারে আকাশ ছুঁয়েছে আমদানি করা সব ধরনের বিদেশি ফলের দাম।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলের দাম। ক্রেতার মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে মালটার দর। পাঁচ-ছয় দিন আগে মালটার কেজি ছিল ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। সে হিসাবে কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। অথচ গত বছর এ সময় মালটার কেজি ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। একইভাবে আফ্রিকান সবুজ আপেলের দর ২৪০ থেকে বেড়ে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে চায়না ফুজি আপেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়।সপ্তাহখানেক আগে নাশপাতির কেজি বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা।

একইভাবে কমলার কেজি ছিল মানভেদে ১৯০ থেকে ২২০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৭০ টাকা।

এ ছাড়া আনার ও আঙুর কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। মাঝারি আকারের আনারের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, কালো আঙুরের কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ এবং সাদা আঙুরের কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বিদেশি এসব ফলের দাম বাড়ার উত্তাপ লেগেছে দেশি ফলে। বাংলা কলার ডজন আট-দশ দিন আগেও কেনা গেছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এখন ডজনে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। চম্পা কলা ডজনে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সবরি কলা ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকার মতো বেড়ে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড বরই বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। মাঝারি আকারের আনারসের পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

এদিকে দেশি ফলের দাম সহনীয় থাকলেও রমজানকে সামনে রেখে দাম বেড়েছে মৌসুমি ফল তরমুজে  প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে  সাড়ে তিনশো টাকায়।’

বিক্রেতারা বলেন, ‘কিছুদিন আগে ক্যারেটপ্রতি দাম ছিল ৩০০০-৩১০০ টাকা। এখন সেটা ৪৩০০-৪৪০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।’প্রতি কেজিতে তাদের ৯০ থেকে ১১০ টাকার বেশি শুল্ক কর দিতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ায় ফলের দাম বেশি পড়ছে, তাই অনেকেই আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

পাইকারী বিক্রেতা রহমত আলী নামের আরেকজন বলেন, ‘গ্রিন আপেল বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৬শ’ টাকা করে কিন্তু আগে বিক্রি হতো ৫ হাজার ২শ’ টাকা করে।’ ‘আঙ্গুর, কমলা এগুলোয় ইন্ডিয়ান বর্ডারে বাংলাদেশ সরকার শুল্ক বাড়িয়েছে। শুল্ক বাড়ানোর কারণে আমরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছি।’‘১১৪ শতাংশ সরকার ট্যাক্স নিয়ে যায়। এ কারণে আমদানিকারকরা আমদানি সীমিত করে দিয়েছে। চাহিদা বেশি, ডলার সংকট,  এলসি পাওয়া যাচ্ছে না। একটা ফল কিনতে লাগে ১২শ’ টাকা। আর সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় ১৯শ’ টাকা। এক কেজি খেজুরে ২৭০ টাকা ট্যাক্স। পাবলিক খাবে কিভাবে?’

ক্রেতারা বলেন, ‘আমাদের জন্য সংকট হয়ে গেছে সব ফলের দাম। যদি এভাবে বাড়ে তাহলে আমরা কিভাবে চলবো?’

এ অবস্থায় দোকানে দোকানে ঘুরছেন অনেক খুচরা ক্রেতা বিক্রেতা। এতো বাড়তি দামে ফল কিনে বিক্রি সম্ভব নয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর