chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আজ পবিত্র আশুরা

পবিত্র আশুরা আজ। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূণ পরিবেশে নানা-কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ সারাদেশে পবিত্র আশুরা পালন করা হবে।

এদিনে নফল রোজা পালনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে রমজান এবং আশুরায় যেমন গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি।’ (বুখারি : ২০০৬)

দিবসটি উপলক্ষে শনিবার সরকারি ছুটি রয়েছে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টাল বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। সরকারি-বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও আশুরার তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শনিবার দুপুর দেড়টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। তবে জননিরাপত্তার স্বার্থে তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফোটানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। অপ্রীতিকর কিছু যেন না ঘটে, সে জন্য বিশেষ সতর্ক অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মূলত আশুরার প্রকৃত শিক্ষা হোসাইনি আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সত্যের পক্ষে লড়াই করার সাহস ও চেতনা অর্জন করা। একই সঙ্গে এদিনের বিশেষ আমল রোজা পালন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর কাছে মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ। আর ফরজ নামাজের পর রাতের নামাজই হলো সর্বোত্তম’ (মুসলিম : ১১৬৩)।

ইসলামপূর্ব যুগেও এদিনটির গুরুত্ব ও মর্যাদা ছিল। সৃষ্টির সূচনা থেকে অনেক তাৎপর্যময় ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আশুরায়। বিশেষ করে হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হজরত হোসাইন (রা.) ও তার পরিবার এবং অনুসারীরা ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে নির্মমভাবে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহিদ হন। ইসলামের ইতিহাসে এ এক মর্মান্তিক ও বেদনাবিধুর ঘটনা। ধর্মীয় গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও কারবালা প্রান্তরের হৃদয়বিদারক ঘটনাকে স্মরণ করে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যথাযোগ্য মর্যাদায় আশুরা পালন করে থাকেন। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল রয়েছে।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র আশুরা অত্যন্ত শোকাবহ, তাৎপর্যপূর্ণ ও মহিমান্বিত একটি দিন। বিভিন্ন কারণে এদিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, পবিত্র ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ। বিশেষ করে হিজরি ৬১ সালের ১০ মহররম মহানবীর প্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার পরিবারবর্গ কারবালা প্রান্তরে শাহাদাতবরণ করে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন।’

দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, পবিত্র আশুরার মহান শিক্ষা আমাদের সকলের জীবনে প্রতিফলিত হোক। কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মৃতিতে ভাস্বর পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী আমাদের অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করে, প্রেরণা যোগায় সত্য ও সুন্দরের পথে চলার। পবিত্র আশুরার মহান শিক্ষা আমাদের সকলের জীবনে প্রতিফলিত হোক- এ প্রত্যাশা করি।’

 

 

তাসু/চখ

এই বিভাগের আরও খবর