chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিয়ের দেনমোহর হজ, অবশেষে স্বপ্নপূরণ

হজ মানে টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, দায়িত্ব-কর্তব্য সব পেছনে ফেলে মহান সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটানো। এমনটাই মনে করেন এ বছর জাপান থেকে হজ করতে যাওয়া কয়েকজন নারী। এদের মধ্যে অন্যতম আলমাস চোজি। এবারই প্রথম হজব্রত পালন করলেন তিনি।

চার বছর আগে বিয়ে হয়েছিল জাপানি নওমুসলিম নারী আলমাস চোজির। সে সময় তিনি হজ পালন করাকেই নিজের দেনমোহর হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু কোভিড মহামারির কারণে হজে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। চার বছর পর এবার তিনি হজ করতে সমর্থ হন। তার ভাষায় হজ হচ্ছে, নিজের সব কিছুকে পেছনে ফেলে মহান রব্বুল আলামিনের সান্নিধ্যে কিছুটা সময় অতিবাহিত করা।

বছর চল্লিশের এ নারী জানিয়েছেন, স্বামীর কাছে বিয়ের দেনমোহর হিসেবে হজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হয়েছে এ বছর।

সৌদি আরবের সেন্টার ফর গভর্নমেন্ট কমিউনিকেশনকে (সিজিসি) এক সাক্ষাৎকারে জীবনের প্রথম হজের অনুভূতির কথা বলছিলেন আলমাস। সেখানে তিনি বলেন, জাপানের একটি ফুড কোম্পানিতে কর্মরত এক মুসলিম শ্রমিকের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তিনি প্রথমবারের মতো ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারেন। ইসলামের মৌলিক বিষয় ও হালাল খাবার সম্পর্কেও তার কাছেই ধারণা লাভ করেন।

একপর্যায়ে আলমাস মুসলিম হয়ে যান। চার বছর আগে ৩৫ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন। সে সময় হজ পালনকেই নিজের বিয়ের মোহরনা হিসেবে নির্ধারণ করেন তিনি। তবে কোভিড মহামারির কারণে হজ পালনে নানা নিষেধাজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা থাকায় তারা হজ করতে যেতে পারেননি। তবে এ বছর সব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় হজ করার সুযোগ পান আলমাস সোজি।

প্রথমবারের মতো স্বচক্ষে পবিত্র বাইতুল্লাহ শরিফ দেখার অনুভূতি জানাতে গিয়ে আলমাস বলেন, আগেও অনলাইনে পবিত্র এ ঘরের অনেক ছবি দেখেছি। কিন্তু চোখের সামনে বাইতুল্লাহ দেখার পর মনে হচ্ছে, আল্লাহর এ ঘর কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর।

অবশেষে এ বছর হজ করতে সৌদি আরবে পৌঁছান আলমাস চোজি। তিনি জানান, মক্কার গ্রান্ড মসজিদের বহু ছবি আগে অনলাইনে দেখেছিলেন। সেগুলো ছিল মানুষে পরিপূর্ণ। কিন্তু এবার যখন সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চোখে দেখলেন, তখন বুঝতে পারেন, মসজিদটি তার কল্পনার চেয়েও বেশি সুন্দর।

হজ করে উচ্ছ্বসিত আলমাস সোজি বলেন, এখানে শুধু হজের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমই পালিত হয় না, বরং হজে এসে পুরো বিশ্বের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। মুখে মাস্ক থাকায় অনেকের চেহারা দেখেনি, তারপরও নিজেদের মধ্যে পরিচিত একটি টিম তৈরি হয়ে যায়। এটি সত্যিই খুব আনন্দদায়ক একটি মুহূর্ত।

আলমাস চোজির সহযাত্রী আরেক জাপানি নারী মুরামা সুগুকু বলেন, তিনিও নওমুসলিম। তিনি যখন আযান শুনেছিলেন, তখন তার ভেতরে যেন ঝড় বয়ে যায়। তিনি তখন কেমন যেন অনুভূতিশূন্য হয়ে পড়েন। পরে তিনি ইসলাম ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন এবং পরবর্তী সময়ে মুসলমান হয়ে যান।

 

তাসু/চখ

এই বিভাগের আরও খবর