chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বাজারের আমলনাম

রমজানে সবজি মাছের দাম চড়া,মুরগীতে কিছুটা কমলেও অস্বস্তিতে খেজুরের দামে।

চট্টগ্রামে খুচরা বাজারে দাম কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির। পোলট্রি খাতের চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রির ঘোষণা দেওয়ার পর গত সাপ্তাহের তুলনায় কমেছে দাম। চট্টগ্রাম নগরের বাজারগুলোতে রমজানের শুরুর দিকে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০৫ টাকায়।

আজ বৃহস্পতিবার নগরের চকবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। তবে দাম কমেনি সোনালি মুরগির। আজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ থেকে ৩৭০ টাকায়। ১০ টাকা কমে প্রতি ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০টাকায়।

রেয়াজউদ্দীন বাজারে মুরগি কিনতে আসা বেসরকারি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বাচ্চারা মুরগি ছাড়া ভাত খেতে চায় না। তাদের কথা ভেবেই কিনতে হচ্ছে। তবে দাম কমায় কিছুটা স্বস্তিবোধ হচ্ছে। তবু ২০০ টাকার ওপরে।

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে দাম কমেছে। তাই খুচরা বাজারেও এখন দাম কমেছে। তবে এখনো বেচাবিক্রি বেশি হচ্ছে না। অনেক দিন দাম বেশি থাকায় মুরগির বাজারে ক্রেতা কম।

ব্রয়লারের দাম কমলেও বাজারে দাম বাড়তি সবজির। নগরের বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢ্যাঁড়স। কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০, পটল ৬০ থেকে ৭০ ও করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছ।

পাহাড়তলী এলাকায় সবজি বিক্রেতা সবুজ বলেন, নতুন সবজি এলে দাম বাড়তি থাকে। বাজারে সরবরাহ বাড়তে থাকলে দাম কমে যাবে। তবে বাজারে এখন ক্রেতা নেই। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে মানুষ খুব কম বাজারে আসছেন।

ক্রেতারা বলছেন, এখনো অনেকেই নিজেদের বেতন–ভাতা পাননি। এর মধ্যে বাজারে সবজির দামও বাড়তি। তাই সংসার চলছে কষ্টে।

এই দিকে হঠাৎ করে বেড়েছে মাছের দাম। পাহাড়তলী মাছ ব্যবসায়ী রফিক বলেন,প্রথম  রোজা থেকে সবকিছুর দাম তরতর করে বেড়েছে। মানুষ কিনেছেও বেশ।

তিনি জানান, বোয়াল মাছ এখন ৬০০ টাকা কেজি, তা কয়েক দিন আগেও ছিল ৭০০ টাকার বেশি। একইভাবে বড় রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্ফু মাছ ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলোর দাম গত সপ্তাহে আরও ২০-৫০ টাকা বেশি ছিল।বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহও রয়েছে ভালো।ছোট মাছের দরদাম করে নিলে ২০০ টাকার নিচেও মিলছে।

এদিকে বাজারে অপরিবর্তিত দেখা গেছে, গরুর মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।রেয়াজউদ্দীন বাজারের মাংস বিতানের আবুল হোসেন বলেন, সবকিছুর দাম কমে গেলেও মাংসের দাম আর কমবে না, বরং ঈদের সময় চাহিদা বাড়ায় দামেও বাড়তে পারে ।

ইফতারের একটি অনুষঙ্গ গাজর বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। এ ছাড়া আলু ২০ থেকে ২৫ ও শসা ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লেবু বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে প্রতি জোড়া ১৫ থেকে ২৫ টাকায়।ইফতারে সব চেয়ে প্রয়োজনিয় খাবারের তালিকায় খেজুর।

সরেজমিনে ফলমন্ডির আড়তে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে বিভিন্ন জাতের খেজুর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কেজি প্রতি আজওয়া ৭৫০ থেকে এক হাজার টাকা, মাবরুম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, মরিয়ম ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, দাবাস ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, জাহিদি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মেজডুল এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা এবং আলজেরিয়া ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম কমতে থাকলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব তেমন নেই। খুচরায় অনেক পণ্য এখনো আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ খুচরা বাজারে এখনো ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৮ আর ভারতীয় ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ লিটার দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষন করে দেখা যায় কিছু পন্যের পাইকারি বাজারে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে বিন্দুমাত্রও নেই। সাধারণ মানুষকে আগের মতোই বেশি দামে ভোগ্যপণ্য কিনতে হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর