হাসপাতালে ১০ মাস বয়সী অসুস্থ শিশুকে ফেলে উধাও স্বজনরা
চিরকুট লিখে ১০ মাস বয়সী শিশুকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেকে) ফেলে গেছেন স্বজনরা। অপুষ্টি, নিউমোনিয়া, শ্বাসজনিত সমস্যা থাকলেও দশ দিন ধরে চিকিৎসক ও নার্সদের পরম মমতায় সুস্থ হয়ে উঠছে শিশুটি।
পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান চিকিৎসকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ১০ মাস বয়সী শিশুটি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস দশ দিন আগে শিশুটিকে হাসপাতালে ফেলে রেখে একটি চিরকুট লিখে পালিয়ে যান স্বজনরা।
চিরকুটে লেখা ছিল, শিশুটির মা-বাবা দুজনই মারা গেছেন। যে কোনো লোক শিশুটির দায়িত্ব নিতে পারেন। চিঠিতে, নিজেকে খুবই গরিব উল্লেখ করেন ওই শিশুটির খালা।
জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর সকালে ৯ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিল শিশুটি। রোগী বৃত্তান্তে শিশুটির নাম দেয়া ছিল আরিফ। বয়স উল্লেখ করা হয়েছিল ১০ মাস। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও শিশুটির রয়েছে অপুষ্টিজনিত সমস্যা। তবে, ফেলে যাওয়ার পর ডাক্তার, নার্সদের সেবার কোনো কমতি ছিল না। ভালোবাসার পরম মমতায় এখন অনেকটাই সুস্থতার পথে শিশুটি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ইনচার্জ সোমা দাশ জানান, আমাদের স্টাফরা যতটুকু সম্ভব একটা শিশুকে দেখভাল করার; ততটুকুই আমরা চেষ্টা করছি।
শুধু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই নয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও অজ্ঞাত রোগীদের নিয়ে কাজ করা ভলেন্টিয়াররাও সার্বক্ষণিক দেখভাল করছে শিশুটিকে।
হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয় অধিদফতরের অফিসার অভিজিৎ সাহা বলেন, একটু সুস্থ হলে যদি তার অভিভাবককে পাওয়া যায়; তাহলে তাদের কাছেই শিশুটিকে হস্তান্তর করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদি তাদের পাওয়া না যায়; তাহলে সমাজসেবা অধিদফতরের ছোটমনি নিবাসে তাকে স্থানান্তর করা হবে।
চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. এ কে এম রেজাউল করিম জানান, চিকিৎসা শেষে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হয় জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে। এ ছাড়া শিশুটির শ্বাসকষ্টও ছিল। তবে চিকিৎসার পর এখন শিশুটির শ্বাসকষ্টও কমেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি শিশুটিকে ফেলে যাওয়ার কারণ ও স্বজনদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।