chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শিপব্রেকিং ব্যবসা দেখিয়ে ৩০০ কোটি টাকা লোপাট, অবশেষে ধরা

শিপব্রেকিং ব্যবসা দেখিয়ে ৩০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ব্যবসায়ী আবুল কালাম হাবিবকে গ্রেপ্তার করেছে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ। রোববার রাতে চট্টগ্রাম নগর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তার বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ১৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়া এক ব্যাংকে বন্ধক রাখা সম্পত্তি অন্য ব্যাংকে বন্ধক দেওয়াসহ কয়েকটি প্রতারণার মামলাও আছে তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে ৮টি মামলায় তার এক বছর করে সাজা হয়েছে বলে জানা যায়।

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের লালবেগ এলাকায় মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম হাবিবকে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাকে হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, জাহাজ ভাঙা শিল্পের সুদিনে ২০১০ সালের দিকে তিনিও ঢুকে পড়েন এ খাতের ব্যবসায়। ব্যবসার শুরুতেই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেন বড় অংকের ঋণ সুবিধা। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে জাহাজ ভাঙা শিল্পে ধস নামলে বেকায়দায় পড়েন তিনি। সেই থেকে ব্যাংকের কোনো টাকা ফেরত দেননি এ ব্যবসায়ী।

আরও পড়ুন

তবে তার প্রতিষ্ঠানের নামে নেয়া এসব ঋণ খেলাপির তালিকায় পড়ে গেলে নতুন করে ঋণ নেন ছেলেকে দিয়ে। ছেলের নামে গড়ে তোলা মেসার্স শাহেদ শিপ ব্রেকার্সের ঋণগুলোও বর্তমানে খেলাপি হয়ে পড়েছে। পিতা-পুত্রের কাছে বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

২০২০ সালে জাতীয় সংসদে প্রকাশিত ঋণখেলাপির তালিকায় ৫০ নম্বরে আছে তানিয়া এন্টারপ্রাইজের নাম। তালিকায় আবুল কালাম হাবিবের এ প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ দেখানো হয়েছে ২১২ কোটি টাকা। ৭২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ নিয়ে তালিকার ২৭৭ নম্বরে রয়েছে তার ছেলের প্রতিষ্ঠান শাহেদ শিপ ব্রেকার্স। শাহেদ শিপ ব্রেকার্সের স্বত্বাধিকারীর নাম শাহেদ মিয়া।

পাওনাদার ব্যাংকের তথ্যমতে, সংসদে প্রকাশ করা তালিকায় আবুল কালাম হাবিব ও তার ছেলের মোট খেলাপি ঋণ দেখানো হয়েছে ২৮৪ কোটি টাকা। প্রকৃতপক্ষে পিতা-পুত্র মিলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এ পর্যন্ত ৩০০ কোটি টাকার বেশি লোপাট করেছেন। ব্যাংক ঋণ ছাড়াও স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি থেকে ব্যবসার নাম অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

আবুল কালাম হাবিব ও তার ছেলের কাছে আইএফআইসি ব্যাংক শেখ মুজিব রোড শাখার ১০৩ কোটি টাকা, এবি ব্যাংক পোর্ট কানেক্টিং রোড শাখার ১০০ কোটি, পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) খাতুনগঞ্জ শাখার ৪৬ কোটি, রূপালী ব্যাংক স্টেশন রোড শাখার ১৩ কোটি টাকা ছাড়াও প্রাইম ব্যাংক পাহাড়তলী শাখা ও ইউসিবিএল হাটহাজারী শাখার বড় অংকের পাওনা রয়েছে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন উর রশীদ বলেন, রোববার রাতে বিশেষ এক অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল কালাম হাবিবসহ পাঁচ পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর