chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আফগান নারীদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রকে সক্রিয় হতে হবে: মালালা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের রক্ষায় আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের নারী শিক্ষা অধিকারকর্মী এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। একইসঙ্গে আফগান নারীদের শিক্ষা ও কাজের অধিকার নিশ্চিতে সক্রিয় হতেও দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এই আহ্বান জানান মালালা। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। ব্লিংকেন ও অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মালালার এই বৈঠকটি ছিল রুদ্ধদ্বার।

বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সামনে মালালার ভূয়সী প্রশংসা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তিনি মালালাকে সত্যিকারের অনুপ্রেরণা বলে মন্তব্য করেন। তার ভাষায়, ‘মালালা আমাদের জন্য সত্যিকারের অনুপ্রেরণা। সারা বিশ্বের নারী ও মেয়েদের জন্য তিনি অনুপ্রেরণা।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানের এই মানবাধিকারকর্মী সত্যিকারের পার্থক্য সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে। ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের সমান ভাবে শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতে আমরা তার পরামর্শ চাই।’

অ্যান্টনি ব্লিংকেন তার বক্তব্যে আফগানিস্তান নামটি একবারও ব্যবহার করেননি। তবে সুযোগ পেয়েই আফগানিস্তান নামটি বলতে এক মুহূর্ত দেরি করেননি মালালা ইউসুফজাই। একইসঙ্গে তুলে আনেন সেখানকার নারী শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে শান্তিতে নোবেলজয়ী এই নারী অধিকারকর্মী বলেন, ‘আপনি (অ্যান্টনি ব্লিংকেন) বলছেন যে, ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা করতেই আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে এখন কেবল আফগানিস্তানেই মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের অধিকার নেই আফগান মেয়েদের।’

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবানের কর্মকাণ্ড নিয়ে মালালা বলেন, ‘তারা (তালেবান) আফগানিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থায় মেয়েদের নিষিদ্ধ করেছে এবং এই বিষয়টি নিয়েই আমি আফগান নারী অধিকার কর্মীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। তাদের প্রতি আমাদের বার্তা এটিই যে- আফগান নারীদেরকে কাজের সুযোগ দেওয়া উচিত এবং মেয়েদরকে স্কুলেও যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।’

এছাড়া আফগান শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশটির শিক্ষা ব্যবস্থায় নিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন প্রাপ্তির বিষয়েও সবার আরও নজর দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।

এদিকে সরকার গঠনের পর সেপ্টেম্বরে মাধ্যমিক পর্যায়ের ছেলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরার অনুমতি দেওয়া হলেও মেয়েদের এখনও শিক্ষাকার্যক্রমের বাইরে রাখা হয়েছে।

তালেবানের দাবি, ইসলামিক আইন মেনে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরই তাদেরকে স্কুলে ফেরানোসহ শিক্ষা কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা হবে। তবে এরপরই প্রায় চার মাস অতিবাহিত হতে চললেও এ বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

জেএইচ/চখ