chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

লামায় প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা: আটক ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক: বান্দরবানের লামা পৌরসভা এলাকার চাম্পাতলী গ্রামের এক কুয়েত প্রবাসীর বসতঘরের ভিতর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

খবর পেয়ে শুক্রবার দিনগত রাত (২১ মে) সাড়ে ৯টার দিকে প্রবাসী নুর মোহাম্মদের ঘরের মূল ফটকের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে লাশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- নুর মোহাম্মদের স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪০), তার মেয়ে রাফি (১৪) ও ১০ মাস বয়সী
নূরী।

পুলিশ এ ঘটনায় প্রবাসী নুর মোহাম্মদের ছোট দুই ভাই, নিহত মাজেদা বেগমের বড় বোন ও তার স্বামীসহ মোট ৬ জনকে প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদের জন্য আটকের পাশাপাশি আলামত সংগ্রহ করেছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ তিনটি বান্দরবান সদর মর্গে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কি কারণে, কে বা কারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এর কোন হদিস মেলেনি। তবে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পুলিশ ও বান্দরবান র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা।

জানা যায়, চাম্পাতলী গ্রামের মৃত বাচা মিয়ার ছেলে নুর মোহাম্মদ একজন কুয়েত প্রবাসী। বর্তমানে তিনি কুয়েতে অবস্থান করছেন। তার ৫ মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যে বড় দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।

আফরিন নামের মেয়েটি গত সোমবার দাদি ছকিনা বেগমের সাথে আলীকদম বোনের শশুর বাড়ীতে বেড়াতে যান। এদিকে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের পানিস্যাবিল থেকে বুধবার সকালে
নিহত মাজেদা বেগমের বড় বোন রাহেলা বেগম বেড়াতে আসে এবং বিকেলে চলে যান।

শুক্রবার সারাদিন নুর মোহাম্মদের পরিবারের লোকজন ঘর থেকে বের না হওয়ায় প্রতিবেশীরা ধারণা করেছিলেন তারা বেড়াতে গেছেন।

কুয়েত প্রবাসী নুর মোহাম্মদের ছোট ভাই আব্দুল খালেক ও শাহ আলম জানায়, সারাদিন কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ও ঘরের মূল ফটকের দরজা বন্ধ থাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘরের পিছনের জানালা দিয়ে উঁকি দিলে নুর মোহাম্মদের কক্ষের মেঝেতে স্ত্রী মাজেদা বেগম ও খাটের ওপর তার মেয়ে রাফির লাশ দেখতে পায়।

বিষয়টি তারা তাৎক্ষনিকভাবে লামা থানাকে অবহিত করেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ানুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ঘরের মূল ফটকের তালা ভেঙ্গে লাশগুলো উদ্ধার করেন।

এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা
জামাল, নির্বাহী অফিসার মো. রেজা রশীদ, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নুর মোহাম্মদের ভাই আবদুল খালেক ও শাহ আলম, নিহত মাজেদা বেগমের বড় বোন রাহেলা বেগম ও তার স্বামী আবদুর রশিদ, হাফেজ সাঈদুর রহমান ও রবিউল ইসলামকে আটক করে থানায়
নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

তাছাড়া র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা ঘটনার ছায়া তদন্ত করবে বলে জানান বান্দরবান র‌্যাব’র কোম্পানী কমান্ডার নিত্যানন্দ দাশ।

এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে লাশ উদ্ধার শেষে তাৎক্ষণিক লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. রিজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ঘরের ভিতর মা মেয়েসহ তিন জনের লাশ পাওয়া গেছে। একটি লাশ খাটের উপর ও দুইটি মেঝেতে পড়ে ছিল। এছাড়া ঘরের আলমারি ও ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার ভাঙ্গা পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় ৬জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানায় এ কর্মকর্তা।

চখ/আরএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর