chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

দুই মিনিটে রেঁকি-এক মিনিটে চুরি, সংঘবদ্ধ চক্র পুলিশের জালে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুই মিনিটে রেঁকি করে এক মিনিটে মোটরসাইকেল চুরি করতে সক্ষম একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

এই চক্রের মূল হোতা একজন কিশোর অপরাধী। বয়স তার আঠারোর গণ্ডি পার না হলেও কাঁধে ঝুলছে ছয়টি মামলা। পুলিশ বলছে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ টি মোটরসাইকেল সে চুরি করেছে। যদিও তার চুরি পেশার শুরু বাইসাইকেল দিয়ে।
রোববার (১৯ জুন) দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিস্তারিত জানানো হয়।

 

টানা ছয়দিন অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর ও পটিয়া এলাকা থেকে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
এই চক্রের গ্রেফতারকৃত সদস্যরা হলো- মো. আবিদ হোসেন শ্রাবণ (১৭), মো. সাজ্জাদ হোসেন(৩১) মো. আমান (২৫)। এসময় আসামিদের হেফাজত থেকে চুরি করা বিভিন্ন কোম্পানির নামী-দামী ৭ টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এসব মোটরসাইকেলের অধিকাংশেরই ইঞ্জিন ও চ্যসিস নম্বর ঘষে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কিশোর মজুমদার বলেন, ঘটনার সূত্রপাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি চুরি সংক্রান্ত পোস্টকে ঘিরে। ফেসবুক কেন্দ্রিক গ্রুপ ‘উই আর চিটাগাং’য়ে একজন নাগরিক তার নিজের মোটরসাইকেল চুরির কিছু ছবি ও ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করেন। পোস্টটি আমার নজরে আসলে আমার কাছে সন্দেহ জনক মনে হয়। মনে হয়েছে এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও চোর ধরা সম্ভব।

 

পরে আমি তার কাছ থেকে ভিডিও এবং ছবিগুলো সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করা শুরু করি। এক পর্যায়ে ঘটনার সাথে কিশোর অপরাধী আবিদ হোসেন শ্রাবণের সম্পৃক্ততা পাই। সে একজন পেশাদার চোর। এর আগেও সে সিএমপির কোতোয়ালি থানায় সাইকেল চুরি করে ধরা পড়েছে। তার উপর গোয়েন্দা নজরাদারী শুরু করি। একসময় জানতে পারি শ্রাবণ কোতোয়ালি এলাকায় অবস্থান করছে। সেখানে গিয়ে তাকে পাই নি। এই সময়ের মাঝে সে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে বন্দর এলাকায় গেছে বলে জানতে পারি। পরে টিম নিয়ে দ্রুত বন্দর এলাকায় চেকপোস্ট বসাই। পরে নিমতলা পানামা টার্মিনাল সংলগ্ন খালপাড় মোড়ে আমাদের চেকপোস্টে সে ধরা পড়ে। ওই সময়ও সে একটি বাইসাইকেল চুরি করে নিয়ে আসছিলো। আমরা সেটি জব্দ করেছি।

 

 

এসআই কিশোর আরও বলেন, তাঁকে গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। সিসিটিভির ফুটেজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করি। সেও অকপটে সব স্বীকারও করে নেয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পটিয়ার শান্তির হাট থেকে আমানকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি হিরো হাঙ্ক মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। তারা দুজন আবার সাজ্জাদের বিষয়ে তথ্য দেয়। সাজ্জাদকেও আমরা শান্তির হাট থেকে গ্রেফতার করি। পরে সাজ্জাদের দেখানো মতে তার গ্যারেজ হতে আরও ছয়টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

 

 

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, চুরির ঘটনার মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে শ্রাবণ। বয়সে ছোট হওয়ায় সাধারণ মানুষ খুব একটা সন্দেহ করে না। সে এই সুযোগটাকে কাজে লাগায়। টার্গেটকৃত স্থান থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে নিরাপদে সটকে যেতে তার তিন মিনিটও সময় লাগে না।

 

সে প্রথম একটি মোটরসাইকেল টার্গেট করবে। পরে সেটির উপর এমন ভাবে বসবে যেন সে রেস্ট নিচ্ছে। এই ফাঁকে সে তার সাথে থাকা মাস্টার কী দিয়ে লক খোলা যায় কিনা সেটা চেষ্টা করে। এরপর সে আবার বাইরে এসে লোকজন আছে কীনা চেক করে। যদি কেউ না থাকে আর লকের সাথে চাবি মিলে যায় তাহলো তার চুরি করতে এক মিনিট সময়ও লাগে না। তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ছয়টি মামলার তথ্য আমরা পেয়েছি। তবে আমাদের ধারণা এর সংখ্যা আরও বেশি হবে।

ইহ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর