জব্বারের বলীখেলায় এবারের চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী
নিজস্ব প্রতিনিধি : নানা জল্পনা কল্পনা ও আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়ে অবশেষে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়েছে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৩ তম আসর।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার হোমনার শাহাজালাল বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জীবন বলী।
কক্সবাজারের চকরিয়ার তারিকুল ইসলাম জীবন বলী এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলেন। এর আগে ১০৯তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হন।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে গেল দুবছর ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা স্থগিত রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। এবারও শুরু থেকে লালদীঘির মাঠ পাওয়া না যাওয়ায় খেলা আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
তবে শেষ মুহূর্তে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী উদ্যোগ নেয়ায় লালদীঘি মাঠের পাশে জেলা পরিষদ চত্বরে ২০ ফুট বাই ২০ ফুটের অস্থায়ী মঞ্চ তৈরী করে বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের বলীখেলায় দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মোট ৭২ জন বলী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। আজকে অনুষ্ঠিত ১১৩ তম আসরের খেলায় প্রথম সেমিফাইনালে মমিন বলীকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেন চকরিয়ার তরিকুল ইসলাম জীবন বলী।
অন্যদিকে দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে সৃজন চাকমাকে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠেন কুমিল্লার শাহাজালাল বলী। সর্বশেষ কুমিল্লার শাহজালাল বলী এবং চকরিয়ার জীবন বলীর মধ্যে ফাইনাল খেলা হয়।
প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী দুই বলীর শক্তির যুদ্ধে শাহজালাল বলীকে ধরাশায়ী করেন জীবন বলী। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার আবদুল মালেকসহ চারজন বলীখেলা পরিচালনা করেন।
খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। খেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।
বলীখেলা শেষে বিজয়ীদের গলায় মেডেল, ক্রেস্ট এবং নগদ অর্থ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ট্রপির পাশাপাশি এবারের চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার টাকা ও রানারআপকে দেওয়া হয়েছে নগদ ১৫ হাজার টাকা।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবসমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আবদুল জব্বার সওদাগর নগরীর লালদীঘি মাঠে আয়োজন করেন কুস্তি প্রতিযোগিতা (বলীখেলা)।
১১৩ তম আসরের এ বলীখেলা উপলক্ষে রবিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা পণ্যসামগ্রী নিয়ে বিক্রেতারা লালদীঘিসহ আশপাশের এলাকায় পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
পবিত্র রমজানের কারণে এবার মেলার সময় পাঁচ দিনের স্থলে দুদিন কমিয়ে তিনদিন করা হয়েছে হয়েছে। সে হিসেবে মেলা থাকবে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত চলবে।
চখ/আর এস