chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা ,মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামী ০৬ বছর পর র‍্যাবের হাতে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করে হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইসহাককে ০৬ বছর পর করেছে র‍্যাব
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন সুলতানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত মোঃ ইসহাক (২৭) চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার মোঃ কামাল হোসেনের ছেলে।

র‍্যাব জানায় ,২০১৬ সালের ০৫ মার্চ সন্ধ্যায় প্রবাসীর স্ত্রী ভিকটিম পারভিন আক্তার(৩৬) এর বাসায় তার ছেলেকে পড়ানোর জন্য গৃহ শিক্ষক আসে। ঐদিন রতে গৃহ শিক্ষক প্রাইভেট পড়ানো শেষে বাসা থেকে যাওয়ার সময় তার ছেলে শিক্ষককে দরজায় বিদায় দিতে গিয়ে বিল্ডিং এর ৪র্থ তলায় সিঁড়িতে মাথায় ক্যাপ পরা একজন অপরিচিত লোক দেখে সে ভয়ে বাসার ভিতরে ঢুকে পড়ে। ভিকটিমের ছেলে বাসায় ঢুকার সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা ০৪ জন লোক বাসায় প্রবেশ করে ভিকটিম ও তার ছেলেকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে ।

এক পর্যায়ে আলমিরার চাবি দিতে বললে পারভিন আক্তার চাবি না দিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করে। আসামীরা তখন পারভিন আক্তারের মুখ চেপে ধরে খাট থেকে ফ্লোরে ফেলে দেয় । পরে তার হাত পা শাড়ির কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখে এবং পরিকল্পিতভাবে পারভিন আক্তার(৩৬)কে তার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। বাসা থেকে স্বর্ণালংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় নিহত ভিকটিম পারভিন আক্তার এর স্বামী মোঃ নুরুল আলম(৪৫) বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব আরো জানায়, পারভিন আক্তার এর স্বামী মোঃ নুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরের যৌথ মালিকানায় বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন রৌফাবাদস্থ বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিতে একটি বিল্ডিংয়ে মামলার ১নং আসামী মোঃ ইয়াছিন দারোয়ান হিসাবে নিয়োজিত ছিল। ইয়াছিন ও মোঃ নুরুল আলমের দুঃসম্পর্কের আত্নীয়। মোঃ নুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুর আবুধাবীতে ব্যবসা করেন। আব্দুস শুক্কুর নিজ উদ্যেগে ইয়াসিনকে বিদেশ নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুস শুক্কুরের সাথে আসামী ইয়াসিনের মনোমালিন্য হলে ইয়াসিন দেশে চলে আসে এবং মোঃ নুুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুর এর উপর তার ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনার কারনে আসামী ইয়াসিন ,মোঃ নুরুল আলম এবং তার বড় ভাইয়ের ক্ষতি করার জন্য তার বন্ধু মোঃ মনসুর(২৫) এর সাথে পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে তাদের পরিকল্পনা মতে তাদের অপর দুই সহযোগী মোঃ আবু তৈয়ব রানা(২৪) এবং মোঃ ইসহাক(২৭) মোঃ নুরুল আলম এর স্ত্রী ভিকটিম পারভিন আক্তার(৩৬) কে তার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে হত্যা করে।
ওই ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত আসামী ইয়াসিন, মনসুর এবং আবু তৈয়ব রানা এর উপস্থিতিতে পলাতক আসামী ইসহাকসহ চার জনকে মৃত্যুদণ্ড রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষনার পর থেকে আসামী মোঃ ইসহাক সু-কৌশলে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ ০৬ বছর আত্মগোপন করে থাকে।

এ বিষয়ে র‍্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার জানান,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই মামলার ৪নং এজাহারনামীয় মৃত্যদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ ইসহাক কে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন সুলতানপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করি। গ্রেফতারকৃত আসামী অকপটে স্বীকার করে যে, পারভিন আক্তার কে হত্যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কেএম/চখ

এই বিভাগের আরও খবর