chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আ.লীগে ভোট না দিলেও রেশনকার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করুন: তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যিনি আওয়ামী লীগের কড়া সমালোচক, কোনসময় আমাদের দলকে ভোটও দেননি, তিনি যদি প্রকৃতপক্ষে অভাবি হন প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত নতুন পঞ্চাশ লক্ষ রেশন কার্ডে তার নাম অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন আ.লীগের প্রতিনিধি ও সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে এসব বিষয়ে মতবিনিময় সভা করেন।

তিনি বলেন, সরকার গত কয়েক বছর ধরে পঞ্চাশ লক্ষ পরিবারের মধ্যে মাসে ৩০ কেজি করে ১০ টাকা দরে চাল দিচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ি নতুন ভাবে যে পঞ্চাশ লক্ষ রেশন কার্ড করা হবে সেগুলো প্রকৃতপক্ষে যাদের প্রয়োজন তাদের মধ্য থেকেই করতে হবে। এই কার্ডটি করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে একটু সতর্ক হতে হবে। এ ধরণের কার্ড করার সময় কোন দলীয় পরিচয় বিবেচনা করা যাবেনা। যার প্রয়োজন তাকেই অন্তর্ভূক্ত করতে হবে দলমত নির্বিশেষে। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, সুতরাং সেভাবেই তালিকা করতে হবে। কারণ একজন মানুষও অভাবে থাকুক সরকার সেটা চাইনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, পৌরসভা আ.লীগ সভাপতি মো. আসলাম খাঁন, জেলা আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. হারুন, দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক জামাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দলীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দল যেহেতু সরকারি দল, সেহেতু আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। সরকারি দল হিসেবে সাধারন মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরা শুরু থেকেই পালন করছে। আজকে একটি মাস দেশের সবকিছু বন্ধ। তারপরও আল্লাহর রহমত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে এখনও পর্যন্ত একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যু বরণ করেনি। সুতরাং কেউ যেন নাখেয়ে থাকে সেদিকে আমাদের দৃষ্টিপাত করতে হবে।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে কিছু মানুষ এখন নতুনভাবে সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। শ্রমজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের প্রতিদিন ইনকাম ছিল, এখন কিন্তু ইনকাম নাই। আবার সবাই কিন্তু ত্রাণ চাইতে পারেনা, নিজেদের সমস্যার কথা মুখ ফুটে বলছেননা। আমাদেরকে খেয়াল করে নিজেদের বিবেচনায় যারা চাইতে পারেনা তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবার যারা ভালো মতো চাইতে পারে দেখা যাচ্ছে সে সবার কাছ থেকে নিচ্ছে। এইটা যাতে না হয় পুরো বিষয়টার মধ্যে একটা সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় বিভিন্ন ভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারের ত্রাণ গুলো সরকারি চ্যানেলে আসে এবং সেগুলো ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। আমাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যেসব গ্রাম গুলোতে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে সেগুলো আমরা চেষ্ঠা করছি আপনারা যাদেরকে দিচ্ছেন তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের তালিকায় আনার জন্য। আমাদের দলের অনেক সামর্থবান নেতৃবৃন্দরাও ত্রাণ দিচ্ছেন। সমাজে যারা অবস্থাসম্পন্ন এবং দয়ালু তারাও ত্রাণ দিচ্ছে। পুরো ত্রাণ কার্যক্রমের মধ্যে একটা সমন্বয় করতে হবে।

কারো সর্দি কাশি হলেই তাকে করোনা রোগী সন্দেহ করা সঠিক নয় জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সর্দি-কাশিতো আমাদের সবসময়ই হয়ে থাকে। প্রত্যেক মানুষেরই হয়। এখন সামাজিক ভাবে হেও করার জন্য দেখা যাচ্ছে কারো সর্দি-কাশি হলো তার সাথে কারো বিরোধ আছে তার সম্পর্কে করোনা রোগী এধরণের বিরূপ কথা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এসব ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকেও সকলের খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় এখনো পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ বা অন্যান্য জায়গা থেকে সেভাবে লোকজনও এখানে আসেনি। এরপরও এসব নিয়ে একটু সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে এখানে একজন করোনা রোগী শনাক্ত হলে তখন মানুষের মধ্যে বিরাট আতঙ্ক তৈরী হবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় কৃষক লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ ইতিমধ্যে দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আজ শুক্রবার থেকে তারা এই কার্যক্রম শুরু করবে। প্রত্যেক ইউনিয়ন ভিত্তিক তারা ইতিমধ্যে টিম গঠন করেছে। প্রত্যেক ইউনিয়নের যেখানে প্রয়োজন সেখানে তারা ধান কেটে দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। এসব কাজ আমাদের করতে হবে।

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান, পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার, সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, থানার ওসি সাইফুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর