chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

যে আমলে মিলবে পাপমুক্তি

চট্টলা ডেস্ক : আমরা মানুষ আর মানুষ মাত্রই আমাদের ভুল হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক সময় এ ভুলের অনেক বড় মাশুল দিতে হয়। কিছু ভুলের সংশোধন নেই। যার ফলে অনেকে জীবনভর এর মূল্য দিতে থাকে। আধ্যাত্মিক জগতের অবস্থাও অনুরূপ। মানুষ যেহেতু ভুল করে তাই সে দুর্বল। কিন্তু পৃথিবীতে ক’জন আছে, যে নিজেকে দুর্বল বলে আখ্যা দেয়? তার ভুলের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চায়? খুব কম লোকই এমন রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন: ‘আর হে আমার জাতি! তোমরা তোমাদের প্রভু-প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রর্থনা কর এবং তাওবা করে তারই দিকে বিনীত হও। তিনি তোমাদের ওপর পর্যাপ্ত বর্ষণশীল মেঘমালা পাঠাবেন এবং তিনি তোমদের শক্তি ক্রমাগত বৃদ্ধি করতে থাকবেন। আর তোমরা অপরাধে লিপ্ত হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিও না।’ (সুরা হূদ: আয়াত ৫২)
এ বিষয়ে হাদিসে উল্লেখ আছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকেরা! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর এবং গুণাহর জন্য মাফ চাও, আমি এক দিনে একশত বার তাওবা করি।’ (মুসলিম) মহানবী (সা.) ছিলেন নিষ্পাপ, তারপরও তিনি তাওবা করতেন। তিনি এজন্যই তাওবা করতেন যেন তার উম্মত এর ওপর আমল করে।
ইসলাম মানুষকে সর্বদা উচ্চতর শ্রেণিতে উত্থিত করতে চেয়েছে। তাই ইসলাম মানুষকে ঐ সকল নির্দেশ দিয়েছে যা তাকে উচ্চ আসনে সমাসীন করাতে পারে। পবিত্র কোরআনে বহু স্থানে আল্লাহ তাআলা তাওবা করতে বলেছেন। নিজের পাপের চন্য ক্ষমা চাইতে বলেছেন। আধ্যাত্মিক জীবনে তাওবা বা ক্ষমা চাওয়া ব্যতিরেকে উন্নতি করা সম্ভব নয়।
পাপ থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য আমরা দোয়া করতে পারি। হাদিসে এসেছে হজরত যিয়াদ বিন ইলাকা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার চাচা কুতবা বিন মালিক হতে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই শব্দাবলীসহ দোয়া করতেন-আল্লহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুংকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আ’মালি ওয়াল আহওয়াই’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে মন্দ আখলাক্ব বা চরিত্র ও আমল এবং মন্দ কামনা-বাসনা থেকে পানাহ চাই।’ (তিরমিজি)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল। এর ফলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তোমাদেরকে ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন। তোমাদের জন্যে উদ্যানরাজি স্থাপন করবেন এবং তোমাদের উপকারার্থে নদী বইয়ে দেবেন।’ (সুরা নূহ: আয়াত ১০-১২)
অর্থাৎ এক কথায় ক্ষমা চাওয়া একটি ফলদায়ক বৃক্ষ। আল্লাহপাকের কাছে ক্ষমা চাওয়া শুধু গুনাহগারের জন্যই নয় নয় বরং সবার ক্ষমা চাওয়া উচিত। বলতে গেলে, ইস্তেগফার বা ক্ষমা না চাওয়া অহংকারের লক্ষণ। আর অহংকার এমন একটি পাপ যা মানুষকে ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করে।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম তার উম্মতকে নসীহত করেছেন, হে আমার উম্মত! তোমরা ইস্তেগফার কর। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। তোমরা আমাকে দেখো। আমিও দিনে সত্তর বার আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। এখানে সত্তর অর্থ সত্তর নয় বরং অগণিত। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের মত নিষ্পাপ ব্যক্তি এবং আল্লাহর সবচেয়ে নৈকট্যপ্রাপ্ত সত্তা যদি দিনে অগণিতবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে থাকেন তবে আমাদের অবস্থা কী হওয়া উচিত। আমরা তো পাপে নিমজ্জিত। প্রতিনিয়তই পাপ কাজ করে যাচ্ছি, তাহলে আমাদের তো সর্বদাই ইস্তেগফারে নিয়োজিত থাকা দরকার। আসলে ইস্তেগফার মানুষকে বিনয়ী করে তুলে। মানুষকে অহংকারী হতে মুক্ত করে।

তাই আসুন, আমরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নির্দেশানুযায়ী আমাদের ভুল-ত্রুটির জন্য দৈনিক ইস্তেগফার করি এবং আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির অধিকারী হই।
আমরা যদি আমাদের ভুল-ত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করি তাহলে খুব সহজেই আমরা পাপমুক্ত হতে পারব। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সেই তৌফিক দান করুন, আমিন।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর